দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- বছর কয়েক ধরেই একদিকে রাজ্যের শাসকদলের জায়গা যেমন ধরে রেখেছে তৃণমূল, তেমনই বিরোধী হিসেবে নিজেদের অবস্থান শক্ত করে চলেছে বিজেপি। এই দ্বিমুখী লড়াইটাকে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা বলে কটাক্ষ করে এসেছে সিপিএম নেতৃত্ব। এবার নির্বাচনী প্রচারে দলীয় নেতৃত্ব দাবি করেছিলেন, এবার রাজ্য ত্রিমুখী লড়াই হবে৷ প্রচারে সেই রকম রণকৌশল সাজানো হয়েছিল। কিন্তু ভোটের ফলাফলে দেখা গেল, রাজ্যে সবুজ ঝড় অব্যাহত রয়েছে। দাপট কমলেও বাকি জায়গায় উড়েছে গেরুয়া আবির। একটি আসন জিতে কোনওমতে মান বাঁচিয়েছে কংগ্রেস। আর বামেদের ফিরতে হয়েছে আবার শূন্য হাতেই। শুক্রবার ছিল ডিওয়াইএফআই-এর পর্যালোচনা বৈঠক। সেখানেই হারের কারণ নিয়ে আলোচনা হয়। সিনিয়র কৃষক বা শ্রমিক নেতৃত্বের লড়াই কোথায়?সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের বৈঠকে কার্যত আক্ষেপ করে একাংশ। তবে শুধু কৃষক বা শ্রমিক সংগঠনের আন্দোলনের ব্যর্থতা নয়, আরএসএসের কাজকর্ম বুঝতে না পারাও ভরাডুবির অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তাঁরা বলছেন, একেবারে গ্রাউন্ড জিরোয় থেকে কাজ করছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ বা আর এস এস। আরএসএস বা আরএএস মনোভাবাপন্ন ব্যক্তিরা যেভাবে কাজ করেছেন, তা অনুধাবন করা যায়নি বলেও মনে করছেন তাঁরা।লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের কাটাছেঁড়ায় রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক দুর্বলতার কথাই উঠে এল সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে। বৈঠকের প্রথম দিনের আলোচনার নির্যাস, বিজেপিকে কারা শেষ পর্যন্ত হারাতে পারবে, এই প্রশ্নে তৃণমূল কংগ্রেসের উপরেই ভরসা করেছেন বেশি সংখ্যক মানুষ| রাজ্যে লোকসভা ভোটের ফল নিয়ে পর্যালোচনার লক্ষ্যে বুধবার থেকে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে হয়েছিল সিপিএমের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক। সূত্রের খবর, বৈঠকের প্রারম্ভিক ভাষণে দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলে নিয়েছিলেন, যথাসাধ্য লড়াই করলেও রাজ্যে বামেদের ফল প্রত্যাশার কাছে পৌঁছতে পারেনি। কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হতে দেরি হয়েছে, আইএসএফের সঙ্গে সমঝোতাও ভেস্তে গিয়েছে শেষ মুহূর্তে। আবার বামফ্রন্টের মধ্যেও আসন নিয়ে টানাপড়েন ছিল, সমন্বয়ের অভাব ছিল। এই প্রতিকূলতা সঙ্গে নিয়েও যা ফল হওয়ার আশা ছিল, তা হয়নি বলে সেলিমের মত।