নিজস্ব সংবাদদাতা :- বিচার চেয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হলেন নির্যাতিতা। ওই মামলায় শুক্রবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চে তীব্র সওয়াল করেন নির্যাতিতার আইনজীবী।আদালতে তিনি বলেন, “রাজ্যপাল বলে কি সাত খুন মাফ! এভাবে সংবিধানের ৩৬১ ধারার দোহাই দিয়ে রাজ্যপাল ফৌজদারি মামলা থেকে পুরোপুরি অব্যাহতি পেতে পারেন না। এমন হলে সুবিচার থেকে বঞ্চিত করা হবে আমার মক্কেলকে।” রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তদন্তে ছাড়পত্র দেওয়ার দাবি জানায় রাজ্যও। এরপরই মামলাটি গ্রহণ করে এ ব্যাপারে তিন সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য ও কেন্দ্রকে বক্তব্য জমা দিতে বলেছে আদালত।রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির তদন্তের অনুমতি চেয়ে গত ৩ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নির্যাতিতা। রাজ্যপাল সংবিধানের ৩৬১ ধারার রক্ষাকবচ এক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারবেন কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মামলাকারী। শুক্রবার বিচারপতি চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পাদরিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানিতে শুক্রবার রাজ্যকে এই মামলায় নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। সঙ্গে মামলাকরী চাইলে এই মামলায় কেন্দ্রকে যুক্ত করতে পারবেন বলেও নির্দেশ দেন তাঁরা।
গত ২ মে রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলেন। রাজভবনের অন্দরে পুলিশ পোস্টে গিয়ে অভিযোগ জানান তিনি। এরপর ঘটনার অনুসন্ধানে নেমে বেশ কয়েকজনের বয়ান রেকর্ড করে লালবাজার। সংগ্রহ করে ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজ। সঙ্গে অভিযোগকারিনীকে অভিযোগ দায়েরে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রাজভবনের বেশ কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সমস্ত তদন্ত বন্ধ হয়ে যায়। এর পর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিযোগকারিনী। আদালতের কাছে ৩৬১ নম্বর অনুচ্ছেদের অধীনে রাজ্যপাল কতটা রক্ষাকবচ পেতে পারেন তার লক্ষ্মণরেখা টেনে দেওয়ার আবেদন জানান তিনি।তবে নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করলেও সাংবিধানিক রক্ষাকবচ থাকায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওঠা এই ধরনের বিস্ফোরক অভিযোগের ক্ষেত্রে কোনও আইনি পদক্ষেপ করতে পারেনি কলকাতা পুলিশ। মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে। সেখানে পুলিশি অনুসন্ধানে স্থগিতাদেশ জারি করা হয।এরপরই বিচার চেয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই মহিলা। এ ব্যাপারে রাজ্য ও কেন্দ্রকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে তাদের বক্তব্য জানাতে বলেছে শীর্ষ আদালত। তিন সপ্তাহ পর ফের মামলার শুনানি হবে।