নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা :- ‘মহাভারতের পরে এবার কাজী নজরুল ইসলামের লেখা সারে জাহাঁ সে আচ্ছা। হে ভগবান।’ একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণের একটি অংশের ভিডিয়ো পোস্ট করে এমনই মন্তব্য করলেন বিজেপি নেত্রী কেয়া ঘোষ। তিনি যে ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন, তাতে মমতাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন, সারে জাহাঁ সে আচ্ছা হিন্দুস্তান হামারা।’ আর সেটা নিয়েই মমতাকে খোঁচা দিয়েছেন বিজেপি নেত্রী। মমতার ভাষণের ওই অংশটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন কয়েকজন নেটিজেনও। একের পর গানের লাইন,কবিতার লাইন,শায়েরি বলে চলেছেন তৃণমূল নেত্রী। নেতাজির স্লোগান থেকে বলেন কাজী নজরুল ইসলামের সাম্যের গানের কথাও। তখনই মমতার মুখে শোনা যায় ‘সাঁরে জাঁহাসে আচ্ছা’-র কথাও। এখন ‘সাঁরে জাঁহাসে’র লেখকের নাম বলতে গিয়ে মমতা নাকি ‘ভুল’ করে কাজী নজরুল ইসলামের নাম বলে ফেলেছেন! এই মর্মে বক্তব্যের শেষ দিকে মমতার হাতে একটি চিরকুট ধরান অরূপ বিশ্বাস। যদিও মমতা বেশ জোরের সঙ্গেই তা খারিজ করে দেন। প্রকাশ্যেই অসন্তোষের ইঙ্গিত ফুটে ওঠে তাঁর চোখে-মুখে।রীতিমতো শামিরুলের নাম করে ডেকে মমতা বলেন, “আমি নিজে পড়েছি এটা ঠিক আছে, কোনটার কথা বলছ শামিরুল, সাম্যের গান গাই?” তারপর আবার ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “ইকবাল বলেছে সারে জাঁহাসে আচ্ছা। এসব আমায় নতুন করে শেখাবে না, এগুলো আমার মুখস্থ।” এরপর ‘সাঁরে জাঁহাসে আচ্ছা’-র প্রথম স্তবকটি ফের বলে শোনান তিনি। এদিন মমতা তাঁর বক্তব্যে বার বারই টেনে আনেন নজরুলের প্রসঙ্গ। বলেন, “মনে রাখবেন, নজরুল লিখেছিলেন, সাম্যের গান গাই, আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনও ভেদাভেদ নেই (নাই)… কাজী নজরুল লিখেছিলেন, কোরান-পুরাণ, বেদ-বেদান্ত, বাইবেল-ত্রিপিটক। গ্রন্থসাহেব-জেন্দাবেস্তা পড়ে যাও যত শখ।”এদিন মমতা আরও বলেন, “বাংলা ছাড়া দেশ চলতে পারে না।মনে রাখবেন, জাতীয় সংগীত কার লেখা? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর জন্মভিটে কোথায়? বাংলায়। এই মাটি জাতীয় সংগীতের হোতা। স্বাধীনতার যুদ্ধে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের জয়হিন্দ স্লোগান। তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি দেব স্বাধীনতা, দেশকে এগিয়ে দিয়েছিল। বন্দেমাতরম, দেশকে বন্দনা করার স্লোগান, কার? বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর বাড়িও এই বাংলায়। গান্ধীজি গুজরাটের মানুষ হলেও জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন এই বাংলায়।