দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :-দেশি রসুনের দাম অত্যাধিক হারে বেড়ে গিয়েছে। আর সেই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে ফের বাজারের দখল নিতে উঠেপড়ে লেগেছে চিন থেকে আমদানিকৃত স্বাস্থের পক্ষে ক্ষতিকর রসুন। যদিও বছর দশেক আগেই এই রসুন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তার পরেও ভারতীয় বাজারে মিলছে চিনা রসুন। নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিভিন্ন বাজারে মিলছে এই রসুন। সম্প্রতি গুজরাটে প্রচুর পরিমাণে চিনা রসুন বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। আর এবার কলকাতার বাজারেও মিলল নিষিদ্ধ চিনা রসুন।শহরের একাধিক বাজারে দেদার বিকোচ্ছে নিষিদ্ধ চায়না রসুন। যা খেলে কিনা মারণব্যাধিরও সম্ভাবনা রয়েছে। বড়বাজার থেকে লেক মার্কেট, মানিকতলা বাজার-সহ বহু জায়গাতেই এই চায়না রসুনের হদিশ মিলেছে। সম্প্রতি লেক মার্কেটে হানা দিয়ে টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের হাতেও ধরা পড়েন বেশ কিছু ব্যবসায়ী। নিষিদ্ধ চায়না রসুন বিক্রি করায় তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে। এবং ওই রসুন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে ধরা পড়লে বিরাট অঙ্কের টাকা জরিমানা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। গোটা দেশে এই চায়না রসুন নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্র। কিন্তু তাতে বিক্রি বন্ধ হয়নি। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে তা ঢুকে পড়েছে বাংলার বাজারে।প্রসঙ্গত, বর্তমানে বাজারে রসুনের মূল্য প্রায় ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। সেই জায়গায় চিনা রসুন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। ফলে কম দাম দেখে অনেকেই চিনা রসুনের দিকে অজান্তেই ঝুঁকছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিনা রসুনে ক্যানসার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক রয়েছে। সেই কারণে ২০১৪ সালে এর আমদানি ও রফতানি নিষিদ্ধ করা হয়। তা চোরাগোপ্তা পথে এই রসুন ঢুকছে ভারতের বাজারে। আর মানুষজন অজান্তেই তা কিনে ফেলেছেন।এবিষয়ে টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে জানান, চিনা রসুন বিক্রি বন্ধ করতে হবে। টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে বিষয়টি আলোচনা করা হবে। যারা বিক্রি করছে তাদের ইতিমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এই রসুন হল ধবধবে সাদা। আর এর কোয়া বড় বড়। দেখতে বেশ সুন্দর। তবে শরীরের পক্ষে ভীষণ ক্ষতিকর। এই রসুনে থাকে মিথাইল ব্রোমাইড। রসুনকে ফাঙ্গাসের হাত থেকে বাঁচাতে কীটনাশক হিসাবে চিন এই বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার করে থাকে।এই রাসায়নিক পেটে গেলে লিভার-কিডনি বিকল হতে পারে। স্নায়ুর সমস্যাও হতে পারে। নষ্ট হতে পারে স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি। এমনকী ক্যান্সারের ঝুঁকি পর্যন্ত থাকে। ২০১৪ সালে এই রসুন নিষিদ্ধ করা হয়। তবে ভারতে নিষেধাজ্ঞা জারির পরেও মূলত বিহার, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে এই ধরনের চোরাচালান বেড়েছে।