প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :-গাড়ির ছাদ চাপড়াচ্ছেন কয়েকজন পুলিশকর্মী। বাজানো হচ্ছে গাড়ির হর্ন। সোমবার শিয়ালদহ আদালত চত্বরে যখন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের মামলার মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে আনা হয়, তখন এমনই কাজ করল পুলিশ। কেন সেই কাজটা করা হয়েছে, তা নিয়ে পুলিশের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, গত ৪ নভেম্বর আরজি কর মামলার চার্জ গঠনের দিন এবং ১১ নভেম্বর বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হওয়ার দিনে যেভাবে পুলিশের গাড়ি থেকে চিৎকার করেছিল সঞ্জয়, সেটার জন্যই এমন কাজ করা হচ্ছে। সঞ্জয় কিছু বললেও তার কণ্ঠস্বর যাতে শোনা না যায়, সেজন্য ওরকম আওয়াজ করা হতে থাকে। কেউ-কেউ বলতে শুরু করেছেন যে আরজি কর মামলায় ‘কুণাল অস্ত্রের’ ব্যবহার করছে পুলিশ। সারদা মামলায় কুণাল ঘোষকে যখন আদালতে আনা হত, তখন তিনি তৃণমূল কংগ্রেস সরকার বিরোধী বিভিন্নরকম মন্তব্য করতেন। সেইসময় গাড়ি চাপড়াতে দেখা যেত পুলিশকে। আরজি কর মামলায় ধৃত সিভিককেই একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে সিবিআইয়ের চার্জশিটে। তাঁর বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ১১ নভেম্বর থেকে প্রতি দিন আদালতে এই মামলার শুনানি হচ্ছে। এর মধ্যে একাধিক বার ধৃতকে পুলিশের প্রিজ়ন ভ্যান কিংবা অন্য গাড়ির ভিতর থেকে সংবাদমাধ্যমের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করতে শোনা গিয়েছে। প্রতি ক্ষেত্রেই তিনি দাবি করেছেন, তিনি নির্দোষ। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। এমনকি, কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের নামও করেছেন তিনি। শনিবার এবং রবিবার আদালত বন্ধ থাকায় এই মামলার শুনানি হয়নি। সোমবার তাঁকে আদালতে হাজির করানোর সময়ে পুলিশকে গাড়ি চাপড়াতে দেখা গেল।২০১৩ সালে সারদা মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন কুণাল। সে সময়ে পুলিশের গাড়ি থেকে অনেক কথা বলেছিলেন তিনি যা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের পক্ষে অস্বস্তির বলে মত অনেকের। তাঁর স্বর চাপা দিতেও পুলিশ গাড়ি চাপড়েছিল। আরজি কর-কাণ্ড ১১ বছর আগের সেই ঘটনা আবার মনে করিয়ে দিল।