দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- ৪১ শতাংশ নয়, করের টাকা আধাআধি ভাগ চাই। মঙ্গলবার নবান্নে অর্থ কমিশনের বৈঠকে এমনই দাবি তুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মুহূর্তে কেন্দ্রের করের অর্থের ৪১ শতাংশ পায় রাজ্য। এই হার বাড়িয়ে ৫০ শতাংশের দাবি তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অর্থ কমিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাদা বৈঠকে বিরোধীরাও ৫০ শতাংশের দাবি তুলেছেন বলে খবর।ষোড়শ অর্থ কমিশনের প্রতিনিধি দলের বৈঠকে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। ‘রং ব্যবহার না করলে কেন্দ্র কেন টাকা দেবে না?’ প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। ”কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিতে রাজ্যও ৪০ শতাংশ টাকা দেয়। তাহলে কেন্দ্রের নামে প্রকল্প না চললে কেন কেন্দ্র টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেবে? রাজ্য যখন টাকা দেয়, তখন রাজ্যেরও এক্তিয়ার রয়েছে।” ষোড়শ অর্থ কমিশনের সদস্যদের সামনে মুখ্যমন্ত্রীর জোরালো সওয়াল। তাঁর ভাষায়, ” গ্রাম উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা কেন্দ্র কেন সরাসরি পঞ্চায়েতগুলিতে পাঠিয়ে দেবে? এই টাকা রাজ্যের মাধ্যমে দেওয়া উচিত।” মঙ্গলবারের ৩০ মিনিটের বৈঠকে রাজ্যের তরফে কী কী সামাজিক সুরক্ষামূলক প্রকল্প পরিচালনা করা হয়, তার বিস্তারিত তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। লক্ষীর ভাণ্ডার, খাদ্যসাথী, কন্যাশ্রী-সহ একাধিক প্রকল্পের মাধ্যমে কী কী ইতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে গোটা রাজ্যে, তার বিস্তারিত তথ্যও তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোন কোন প্রকল্পে কেন্দ্রর পক্ষ থেকে কত টাকা রাজ্য পায়, তার বিস্তারিত খতিয়ানও তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ” কেন্দ্রের থেকে টাকা বকেয়া, নাম না ব্যবহার করলে কেন্দ্র বলছে টাকা দেবে না, এটা কোন ধরনের দ্বিচারিতা?”
উল্লেখ্য, চলতি পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের মেয়াদ ২০২১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত। ইতিমধ্যেই ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর অরবিন্দ পানাগড়িয়ার নেতৃত্বে গঠিত হবেছে যোড়শ অর্থ কমিশন। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের মেয়াদ শেষে ষোড়শ অর্থ কমিশন কার্যকর হবে। এই অর্থ কমিশনের আওতায় পাঁচ বছরের জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দের রূপরেখা চূড়ান্ত হবে।কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হন। জানান, বিভিন্ন খাতে কেন্দ্রীয় বকেয়া মিলছে না। সেই টাকা পেলে সামাজিক প্রকল্পগুলি ভালোভাবে করা যাবে। কিন্তু এনিয়ে অর্থ কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা শুধুমাত্র করের অর্থের বিষয়টি দেখভাল করেন। কেন্দ্রীয় বকেয়া বা কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত টাকা রাজ্যকে দেওয়া তাঁদের আওতাভুক্ত নয়। তবে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের এই বার্তা পৌঁছে দেবেন বলে আশ্বাস দেন প্রতিনিধিরা। পশ্চিমবঙ্গের জন্য কেন্দ্র অর্থ কমিশন যে টাকা বরাদ্দ করেছে, তার মধ্যে এবার নগরায়নে অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য সরকার |