Breaking News

বাংলায় প্রথম ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে মৃত্যু হরিদেবপুরের বাসিন্দার,শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন!

প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- করোনা অতিমারি পরিস্থিতির মধ্যেই মারণ ছত্রাক সংক্রমণ ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের হানায় কলকাতায় এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে | জানা গিয়েছে, মৃত ওই মহিলা হরিদেবপুরের বাসিন্দা | বছরে বত্রিশের শম্পা চক্রবর্তী করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি ছিলেন শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে | করোনার পাশাপাশি, তিনি মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসেও আক্রান্ত হন |শম্পাদেবীর মৃত্যুতে চিন্তিত চিকিৎসকরা| শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতাল সূত্রে খবর, হরিদেবপুরের শম্পাই ছিলেন রাজ্যের প্রথম ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত | তাঁকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন চিকিৎসকরা|

করোনা আক্রান্ত ওই মহিলা অনিয়ন্ত্রিত ব্লাডসুগার ও মিউকরমাইকোসিস নিয়ে শম্ভুনাথে চিকিৎসাধীন ছিলেন | অচৈতন্য ওই রোগিণীকে প্রতি মিনিটে প্রায় ১২ লিটার অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছিল | আচমকাই একদিন দেখা যায় শম্পাদেবীর নাকের উপরে কালো ছোপ,সন্দেহ হয় চিকিৎসকদের | পরীক্ষা করতেই ধরা পরে সত্যিটা শম্পাদেবীর সাইনাস, মস্তিষ্ক ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়েছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ | তড়িঘড়ি শুরু করা হয় মিউকরমাইকোসিসের ওষুধ অ্যাম্ফোটেরিসিন-বি | কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি | শুক্রবার মারা যান তিনি | তাঁর সাইনাস, চোয়াল, চোখ ও মস্তিষ্ক ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে | মিউকরমাইকোসিসে মৃত্যু কি না খতিয়ে দেখতে গঠন করা হল মেডিক্যাল বোর্ড | জানা গেছে,তাঁর দেহে যে সমস্ত উপসর্গ ছিল তা দেখে এই হাসপাতালের বিশেষজ্ঞদের যে কমিটি রয়েছে তারা সন্দিহান হয়ে পড়ে | বিশেষজ্ঞরা অনুমান করেন, ওই তরুণী মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত | এরপরই একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয় | হাসপাতাল সূত্রে খবর, এই বোর্ডে যে সমস্ত চিকিৎসকরা রয়েছেন তাঁরাও মোটের উপর মনে করছেন এটা মিউকরমাইকোসিসেরই ঘটনা কিন্তু যেহেতু এই মুহূর্তে দেশজুড়ে এই সংক্রমণকে মহামারী হিসাবে দেখা হচ্ছে | সেই জায়গা থেকে রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবন এ নিয়ে একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করেছে | যেখানে এ সংক্রান্ত মৃত্যু পর্যালোচনা করে তারপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যাবে | সেই কমিটি এখনও ওই তরুণীর মৃত্যু মিউকরমাইকোসিসে কি না তাতে সিলমোহর দেয়নি | ইএনটি বিশেষজ্ঞ ডা. শান্তুনু পাঁজার কথায়, শরীর দুর্বল হলে মূলত বাসা বাধে এই ছত্রাক | করোনা রোগীরা বেশিদিন আইসিইউ-তে থাকলে, কিংবা তাঁদের উপরে স্টেরয়েডের ব্যবহার বেশি হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় | এমন ক্ষেত্রে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ঢুকে পড়ে শরীরে | যেমনটা হয়েছিল শম্পা দেবীরও | এতদিন রাজস্থান, মুম্বাই, তেলেঙ্গানা থেকেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের খবর আসছিল | এই ছত্রাকের দ্বারা সবথেকে বেশি সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসছে মহারাষ্ট্রে | ইতিমধ্যেই সেখানে আক্রান্ত প্রায় ১৫০০ মানুষ | করোনার মতোই এই রোগের জন্য তৈরি করা হয়েছে আলাদা ওয়ার্ড রোগীদের জন্য পৃথক ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে রাজস্থানেও |

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *