নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা :- বিজেপির নবান্ন অভিযানে সেনাপতির ভূমিকায় ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সাঁতরাগাছি থেকে যে মিছিল করে নবান্ন অভিযানে আসার কথা ছিল বিজেপি কর্মীদের, তার নেতৃত্বে থাকার কথা ছিল শুভেন্দুর। কিন্তু মঙ্গলবার বেহালা থেকে সাঁতরাগাছির উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার পরই দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে ওঠার সময় আটকে দেওয়া হয় শুভেন্দুকে। পুলিশের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বাকবিতণ্ডার পরই শুভেন্দুকে আটক করে পুলিশ। আর তা নিয়েই চরম কটাক্ষ করতে শুরু করেছে শাসক দল তৃণমূল। এদিন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ”এ নাকি বিরোধী দলনেতা। বিরোধী দলনেতা হাঁটতে হাঁটতে পুলিশের গাড়িতে উঠল। আলুভাতে সখী একটা৷ মুখে মারিতং জগৎ। বিরোধী দলনেতা হতে গেলে মমতার থেকে শিখতে পারত।” দিলীপ ঘোষের প্রসঙ্গ টেনে কুণাল বলেন, ”দিলীপ দা বললেন যেখানে আটকাবে সেখানেই বসব। শুভেন্দু অধিকারী কোথায় বসলেন। তিনিই চলে গেলেন। তিন মহিলা পুলিশ কর্মীই শেষ করে দিল। বিরোধী দলনেতার লড়াইয়ের যোগ্যতাই নেই। শুধু শুধু এ তো লোককে এনে হয়রানি। বিজেপি কর্মীরা জানুন, শুভেন্দুর বুকে নেই দম, ও খাবে চমচম। এই যে বারবার শুভেন্দু বলে, ওদের অর্ধেক লোক আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে৷ এবার বল কে যোগাযোগ রাখে? যোগাযোগ রাখলে পুলিশের স্ট্যাট্রেজি জানতে পারত তো।”দুপুর তখন ২টো ৪০। সাঁতরাগাছিতে গোলমাল চলছে। দফায় দফায় খণ্ডযুদ্ধ পুলিশ ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে। ও দিকে হাওড়া ময়দান থেকে মিছিল নিয়ে এগোতে গিয়ে আটকে গিয়েছেন রাজ্য় সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালকে নিয়ে বসে পড়েছেন রাস্তায়। লালবাজারে আটক শুভেন্দু অধিকারী, লকেট চট্টোপাধ্যায়দের মুক্ত করতে ঘোষণা ছাড়াই বিজেপির চতুর্থ মিছিল। এমন সময়ে মিছিল নিয়ে হাওড়া ব্রিজের কাছে বাধা পেয়ে দিলীপ ঘোষ ঘোষণা করে দেন, ‘‘নবান্ন অভিযান শেষ।’’সুকান্ত দিলীপের ঘোষণা শোনার পরে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আলাদা আলাদা মিছিল। আলাদা আলাদা আন্দোলন। দিলীপ ঘোষ নিজের মিছিল শেষ ঘোষণা করতে পারেন। কিন্তু আমার মিছিল শেষ নয়। নবান্ন অভিযান কর্মসূচি চলছে। পুলিশ যতক্ষণ না আমায় গ্রেফতার করে ততক্ষণ রাস্তাতেই বসে থাকব।’’ এর প্রায় আধ ঘণ্টা পরে ৩টে ২০ নাগাদ সুকান্তকে আটক করে পুলিশ।বিজেপির অন্দরে এমন ঘটনা অবশ্য আগেও ঘটেছে। তার মধ্যে বিজেপির প্রাক্তন এবং বর্তমান রাজ্য সভাপতির মধ্যে আপাতদৃষ্টিতে মতপার্থক্য প্রকাশ্যে এসেছে অনেকবার। এদিন নবান্ন অভিযান নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “বিজেপির লোক নেই। ওরা লম্বা করে এক লাইনে দাঁড়ালেও ওরা নবান্ন অবধি পৌঁছতে পারবে না। ওদের লোকই তো নেই৷ ভিন রাজ্য থেকে বাসে করে সমাজবিরোধীদের আনা হয়েছে। যাদের লোক নেই তাদের কেন বাধা দেব? বাধা দিয়ে কী হবে।”