প্রসেনজিৎ ধর :-জলপাইগুড়ির মাল নদীতে বিসর্জনের সময় আচমকা হড়পা বানে আটজনের মৃত্যুর পর নড়েচড়ে বসল রাজ্য সরকার ৷ বিসর্জনের মরশুমে সবক’টি জেলার প্রশাসনকে সতর্ক করল রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক ভবন, দেওয়া হল নয়া নির্দেশ |জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। প্রায় ৭০ জনকে উদ্ধার করেছে এনডিআরএফ টিম। ওই ঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর জেলাগুলিকে কড়াভাবে সতর্ক করল নবান্ন। এদিন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী সমস্ত জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতিমা নিরঞ্জনের ঘাটে সমস্ত ধরনের নিরাপত্তা রাখতে হবে। মাইকিং করে সতর্ক করতে হবে ভাসান দিতে এসে জলে নামা লোকজনকে। একটি নির্দিষ্ট এলাকার পর যাতে জলে দূরে কেউ না যায় সে ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। শনিবার কলকাতায় কার্নিভাল। শুক্রবার সমস্ত জেলায় হবে কার্নিভাল। বিপর্যয়ের জলপাইগুড়িতেই জোড়া কার্নিভাল হবে। একটি জলপাইগুড়ি শহরে। অন্যটি ময়নাগুড়িতে।এদিন সামগ্রিক পরিস্থিতি ও কার্নিভালের প্রস্তুতি নিয়ে নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা, রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এবং এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের কাছে কালকের ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। এদিন জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, গত কাল পর্যাপ্ত পরিমাণে পুলিশ ছিল| সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে বৃহস্পতিবার থেকে কাউকে জলে নামতে দেওয়া হবে না। প্রতিমা বিসর্জন হবে ক্রেনের মাধ্যমে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, বালির বাঁধ দেওয়ার কারণেই বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে মাল নদীর ঘাটে। এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমি কিছু জানি না।’ তাঁর কথায়, ‘গত ২০ বছর ধরে এখানে বিসর্জন হচ্ছে।কোনও দিন কোনও বিপর্যয় ঘটেনি।’বৃহস্পতিবারের বৈঠকে রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলাশাসকদের বলা হয়, যেখানে যেখানে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হবে, সেই সমস্ত জায়গায় পর্যাপ্ত সংখ্যায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করতে হবে ৷ প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য কোথাও নদী বা জলস্রোতের স্বাভাবিক ধারা আটকানো যাবে না| যে কোনও দুর্ঘটনার মোকাবিলা করার মতো প্রশিক্ষিত লোকবল এবং সরঞ্জাম মজুত রাখতে হবে ৷ নিরঞ্জনের ঘাটগুলিতে সর্বদা নজরদারির বন্দোবস্ত করতে হবে ৷ প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এখনও তিনদিন প্রতিমা নিরঞ্জন হবে ৷ সেই প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সতর্ক থাকতে হবে ৷