দেবরীনা মণ্ডল সাহা :- প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় ভয়ঙ্কর হড়পা বান। মাল নদীতে হড়পা বানে প্রাণ হারিয়েছে ১ শিশু সহ মোট ৮ জন। মর্মান্তিক সেই ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ও । নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য ২ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে দেওয়া হবে এই আর্থিক সাহায্য়। এর পাশাপাশি আহতদের প্রত্যেককে দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ। একই অঙ্কের আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকারও। নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে দেওয়া হবে ২ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ। আর আহতদেরকে ৫০ হাজার টাকা।পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট নেই। নৌকা তো অনেক দূরের কথা। হাতে গোনা কয়েকজন সিভিল ডিফেন্স কর্মী। মাল নদীতে বিসর্জনের সময় এই পরিকাঠামো নিয়েই ময়দানে নেমেছিলেন বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা। এরপর যখন মাল নদীতে আচমকা জল বাড়়তে শুরু করে তখন কার্যত অসহায়ের মতো তাকিয়ে দেখলেন সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। এদিকে গোটা ঘটনা নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছে নবান্ন।তাঁদের অসহায়তার কথা জানিয়েছেন সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। মাত্র ৮জন সিভিল ডিফেন্স কর্মী ছিলেন বিসর্জনের সময়। আর একের পর এক প্রতিমা বিসর্জনের গাড়়ি নদীগর্ভে নেমে পড়ে রাতে। এমনকী নদীর মধ্যে নেমে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন অসংখ্য মানুষ। সিভিল ডিফেন্সের এক কর্মী সংবাদমাধ্যমের সামনে জানিয়েছেন, বেশি কর্মী ছিল না। শুধু দড়ি ছিল আমাদের কাছে। দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, বিসর্জনের ব্যাপারটি হয়তো অতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়নি। তবে কিছুদিন আগেই ওখানে একটা ট্রাক ভেসে গিয়েছিল হড়পা বানে।উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, অনেকেই বলছেন নদীতে কেন নামতে দেওয়া হল? আবার নামতে দেওয়া না হলে বলা হত সরকার ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাধা দিচ্ছে। একটা ঘটনা ঘটেছে। স্বাভাবিকভাবে একটা আবেগের ব্যাপার থাকে। হঠাৎ করে হয়েছে। আবার ঠিক হয়ে যাবে। বৃহস্পতিবার টুইটারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘দুর্গা প্রতিমার বিসর্জন চলাকালীন জলপাইগুড়ির মাল নদীতে একটি মর্মান্তিক হড়পা বানের ঘটনা ঘটেছে। ৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন, আমি প্রার্থনা করি যেন তাদের পরিবার এই কঠিন সময়ে শক্তি খুঁজে পান। ১৩ জন মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, আমি তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’মালবাজারে বিপর্যয়ের ঘটনায় রাজ্য সরকারের তরফে ইতিমধ্যে হেল্পলাইন নম্বর খোলা হয়েছে। নম্বর গুলি হল, ০৩৫৬১২৩০৭৮০ ও ৯০৭৩৯৩৬৮১৫। এই কঠিন সময়ে সকলকে জোটবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেছেন, ‘এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ-এখনও তল্লাশি অভিযান ও উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। পুলিশ, সিভিল ডিফেন্স স্বেচ্ছাসেবক এবং স্থানীয় যুবকদের চেষ্টায় প্রায় ৭০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আমি তাদের নিঃস্বার্থ ভূমিকার প্রশংসা করি। আর কেউ নিখোঁজ নেই বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।