দেবরীনা মণ্ডল সাহা :- সামনে মাধ্যমিক পরীক্ষা আছে। তাই পড়াশোনায় বাড়তি জোর দিক মেয়ে চেয়েছিল মা। কিন্তু সেখানে দেখা যায় ছাত্রীটি একটু মোবাইলের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। এই দৃশ্য দেখে মেয়েটির মা টেনশনে পড়ে যান। আর কড়া ভাষায় বকাবকি করেন। যা মেনে নিতে পারেনি ছাত্রীটি। এরপর বাড়ির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন মা। যখন কাজ সেরে ঘরের দিকে ফিরলেন তখন মেয়ের ঝুলন্ত দেহ দেখলেন সামনে।মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুরের সোনারপুর পুরসভার মালিপাড়ায়। জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রীর নাম পল্লবী মণ্ডল। সোনারপুর পুরসভার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড মালিপাড়াতে ভাড়ার বাড়িতে থাকত বাবা-মায়ের সঙ্গে। পল্লবীদের আদি বাড়ি ছিল জয়নগর থানার ঢোসা গ্রামে। আগামী ২৩শে ফেব্রুয়ারি শুরু হবে রাজ্যের মাধ্যমিক পরীক্ষা। এবার পরীক্ষায় বসার কথা ছিল পল্লবীর। কিন্তু পড়াশোনায় তার বিশেষ মনোযোগ ছিল না। সারাদিন ফোনেই ব্যস্ত খাকত সে। স্বাভাবিকভাবেই তা নিয়ে বাবা-মা অত্যন্ত বিরক্ত ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে কাজে যাওয়ার আগে পল্লবীকে বকাবকি করেন মা দেবযানী।রাতে বাবা-মা বাড়িতে ফিরে পল্লবীকে নাম ধরে ডাকাডাকি করলেও কোনও সাড়া পাননি। এরপর তার পড়ার ঘরে যান। সেখানেই দেখতে পান গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে পল্লবী। চিৎকার করে ওঠেন নাবালিকার বাবা-মা। ছুটে যান প্রতিবেশীরা। খবর দেওয়া হয় নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশকে। পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। আকস্মিক এই ঘটনায় হতবাক পল্লবীর পরিবার।
ঘটনায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পল্লবীর নিথর দেহটি আজ ময়নাতদন্তে পাঠায় নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ।এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন আত্মীয়স্বজনরা। আর এসে পৌঁছয় পুলিশ। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে। পল্লবীদের আদি বাড়ি জয়নগর থানা এলাকায়। কর্মসূত্রে তাঁরা নরেন্দ্রপুর থানা এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকেন। বাড়িতে এখন শোকের পরিবেশ। মা জ্ঞান হারাচ্ছেন। বাবা চোখে জল নিয়ে বসে আছেন। তবে এই ঘটনা নিয়ে পল্লবীর বাবা বিভাস মণ্ডল বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই মেয়ে অত্যন্ত জেদি। যখন যা চায় তখনি তা এনে দিতে হয়। না হলে রাগের মাথায় যা ইচ্ছে তাই করে।’