দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- বাজেট অধিবেশনের শুরুতেই উত্তাল হয়ে উঠল বিধানসভা। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস | ভাষণ পাঠ শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই স্লোগান দিতে শুরু করেন বিজেপির বিধায়কেরা। তবে তাতে এতটুকু বিচলিত হননি রাজ্যপাল। স্লোগানের মাঝেই পুরো ভাষণ শেষ করেন তিনি। এদিন ভাষণে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা প্রসঙ্গ উঠে আসতেই সরব হয় বিজেপি। তৃণমূল সরকার-বিরোধী স্লোগান তুলতে থাকেন তাঁরা। ২০২২-এর বাজেট অধিবেশনে জগদীপ ধনখড় রাজ্যপাল থাকাকালীন ভাষণ শেষ করতে পারেননি বিধায়কদের হট্টগোলে। এবার সেই একই রকম হট্টগোল হলেও ভাষণ পড়া বন্ধ করেননি রাজ্যপাল।বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালেপ উপস্থিতিতেই বিজেপি বিধায়করা রব তোলেন ‘চোর ধরো, জেল ভরো। ‘ রাজ্যপালের সামনে কাগজ ছুড়ে বিক্ষোভ দেখানে শুরু করেন গেরুয়া শিবিরের বিধায়করা।
প্রসঙ্গত বুধবার রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে এদিন দুপুর ২টো থেকে রাজ্যপালের ভাষণ শুরু হয়। এই নিয়ে তৃতীয়বার বিধানসভায় এলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপালের ভাষণের সময় কোনওরকম হই–হট্টগোল করা যাবে না বলে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়কদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিরোধী শিবিরের বিধায়করা প্রথম থেকেই ছিলেন হট্টগোলের মুডে। ভাষণ চলাকালীন বিধানসভার কক্ষ থেকে ওয়াকআউট করেন শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপির অন্যান্য বিধায়করা। বিধানসভার বাইরে চলতে থাকে স্লোগান দেওয়া। নয়া রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এতদিন সংবাদমাধ্যমে মন্তব্য করতেন বিজেপি নেতারা। আজ সরাসরি বিধানসভায় তাঁর বক্তব্য রাখতে বাধা দিলেন তাঁরা। তবে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বিধানসভা চত্বর থেকে বেরিয়ে যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপাল পাঠ করেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিগত বছর শান্তিপূর্ণভাবে কেটেছে।
রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সরকার সর্বদা তৎপর। আনন্দ ও সৌহার্দ্যের বাতাবরণে সব ধর্মীয় উৎসব পালিত হয়েছে। অতিমারির সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘব করেছে রাজ্য সরকার।’ এটাই মেনে নিতে পারেনি বিজেপি বিধায়করা।টানা ১১ মিনিট স্লোগান চালিয়ে যায় বিজেপি। তাতে যেমন ছিল ‘রাজ্যপাল হায় হায়’ তেমন ছিল ‘পার্থ চোর–পরেশ চোর, তৃণমূলের সবাই চোর।’ যদিও এসবে কর্ণপাত করেননি রাজ্যপাল। তিনি নিজের কাজ সেরে চলেন। এই পরিস্থিতিতে হালে পানি না পেয়ে দুপুর ২টো ১৪ মিনিট নাগাদ বিধানসভা কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যায় বিজেপি পরিষদীয় দল। তারপর বিরোধী শূন্য বিধানসভায় বক্তৃতা পাঠ করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।