প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :-‘পড়ুয়া না থাকলে শিক্ষক রেখে লাভ নেই। যে সমস্ত স্কুলে পড়ুয়া নেই সেই সমস্ত স্কুল তুলে দিন।’ শিক্ষক বদলি সংক্রান্ত একটি মামলায় রাজ্যকে এমনই পরামর্শ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শিক্ষক বদলি সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘পড়ুয়া অত্যন্ত কম থাকলে স্কুলের অনুমোদন প্রত্যাহার করে নিন। সেই সমস্ত স্কুলের জন্য অযথা শিক্ষক রেখে লাভ নেই। প্রয়োজনে যেখানে ছাত্রছাত্রী রয়েছে সেখানে শিক্ষকদের পাঠান।’ তিনি বলেন, ‘দিল্লি যদি মডেল স্কুল করে দেখাতে পারে তাহলে পশ্চিমবঙ্গ কেন পারবে না।’
শিক্ষক বদলি সংক্রান্ত মামলায় এর আগে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করেছেন বিচারপতি বসু। একটি স্কুলের উদাহরণ টেনে বিচারপতি বসু বলেন, ‘কোনও স্কুলে ১৩ জন ছাত্র পিছু ৫ জন করে শিক্ষক রয়েছে। আবার কোনও স্কুলে ৫৫০ জন পড়ুয়ার জন্য রয়েছে মাত্র ৮ জন শিক্ষক। ছাত্র শিক্ষকের এই অনুপাত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি। এরপরই তিনি ওই সমস্ত স্কুলের অনুমোদন তুলে দেওয়ার পরামর্শ দেন। যদিও শিক্ষা দফতরের আইনজীবী জানান, এরকম হলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিচারপতি বসু বলেন, ‘স্কুলের এই অবস্থা চিরকাল চলতে পারে না। মেয়েদের স্কুলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রক্ষী নেই, তার ব্যবস্থা করার প্রয়োজন।’ অন্যদিকে, শিক্ষক বদলি নিয়ে নিয়ন না মানলে বেতন বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিচারপতি বসু। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, শিক্ষকের পরিবর্তে পড়ুয়াদের কথা ভাবতে হবে। হাওড়ার রাসপুর গার্লস স্কুলে সিভিক ভলেন্টিয়ার মোতায়েন করা যায় কিনা সে বিষয়ে পুলিশ সুপারকে বিবেচনা করতে বলেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, ওই স্কুলের শিক্ষিকা বাসবী সামন্ত বাড়ির কাছে স্কুলে বদলি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। এরপর স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠান বিচারপতি। তাতে দেখা যায়, ওই স্কুলে ১৫ জন শিক্ষিকা থাকার কথা। তার জায়গায় রয়েছে ৮ জন শিক্ষিকা। তারপরে স্কুলের হাল ফেরানো নিয়ে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।