প্রসেনজিৎ ধর :- আজ, অনুব্রত মণ্ডলকে নয়াদিল্লি নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে ফেলেছে ইডির তদন্তকারীরা। দোলের দিন অনুব্রত–পর্ব নিয়েই রাজ্য–রাজনীতি সরগরম হয়ে রয়েছে। আগেই অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে অপব্যবহার করা হচ্ছে বলে ৯ রাজ্যের নেতা–নেত্রীরা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন। দোলের দিন অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি যখন চরমে তখন তাঁর পাশে দাঁড়াতে দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেসকে। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এই নিয়ে সুর চড়িয়েছেন।এদিন এ প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, দেশের বিচার ব্যবস্থার উপর আমরা সম্পূর্ণ আস্থাশীল। দেশের আইনের মাধ্যমেই সঠিক বিচার পাবেন অনুব্রত । আমাদের দেশের বিচারপতিরা আইনের বিষয়ে যথেষ্ট দক্ষ। তাঁরা কোনও ভুল করতে পারেন না। এদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ফিরহাদ বলেন, “কোর্টের বিষয়, সে ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না আমি। তবে বিচারের বাণী নীরবে, নিভৃতে কাঁদবে না। বিচার হবেই, বিচারে সত্য বেরিয়ে আসবে। আমরা বিচার ব্যবস্থার উপর বিশ্বাস করি। ভগবান যেমন কোনও অন্যায় করতে পারেন না, বিচারকও পারেন না। এটা আমি মন থেকে বিশ্বাস করি। এজেন্সির রাজ শেষ কথা বলবে না। শেষ কথা বলবেন মানুষ।” যদিও এই মন্তব্যে ফিরহাদকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা। তাঁর কথায়, “শেষ পর্যন্ত অনুব্রতর ভাগ্যলিখন পূর্ণ হতে চলেছে। তাই কে, কী চিৎকার করল, কী বলল, যায় আসে না। দিল্লি যাওয়ার আগে সহানুভূতি দেখানোর চেষ্টা করছেন, যাতে সেখানে গিয়ে মুখ না খোলেন অনুব্রত। আসল অপরাধীদের কথা ফাঁস না করে দেন। তাই এ সব বলে অনুব্রতর পাশে থাকার লোকদেখানো প্রচেষ্টা চলছে। অনুব্রত মুখ খুললে, অনেকের গায়ে আঁচ পড়বে। বক্তার গায়ে যে আঁচ পড়বে না, তারও গ্যারান্টি নেই।”
অন্যদিকে গরুপাচার কাণ্ডে জাল গোটাচ্ছে ইডি বলে মনে করা হচ্ছে। আজই অনুব্রত মণ্ডলকে কলকাতায় নিয়ে গেলে আসানসোল জেলের রাস্তা শুদ্ধকরণ অভিযানে নামল বিজেপি। জেলের সামনের রাস্তা ঝাঁট দিয়ে, গঙ্গাজল ছিটিয়ে, শুদ্ধ করা হল। ঢাক বাজানো হল। গোটা বিষয়টি বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য সম্পাদক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জেলের বাইরে করা হয়েছে। চলে আবির খেলাও। এদিন বিজেপি সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে মেয়র বলেন, ‘আমাদের দেশে এজেন্সি রাজ, কেন্দ্রীয় পুলিশ রাজ শেষ কথা বলে না। শেষ কথা বলে সাধারণ মানুষ। একটা সময় দেশের সমস্ত বিরোধী দলের নেতাদের নিয়ে গিয়ে একটা জেলে আটকে রাখা হয়েছিল। সেই সময়ও দমন পীড়নের পথ নিয়েছিল তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার। ফলস্বরূপ দেখা গিয়েছিল মানুষের ভোটে সেই সরকারকেও ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়েছিল। দমন পীড়ন চালিয়ে এদেশে ক্ষমতায় বেশি দিন টিকে থাকা যায় না।’