প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- অবশেষে গ্রেফতার শান্তনুর লিঙ্কম্যান অয়ন শীল। টানা ৩৭ ঘণ্টা তাঁর সল্টলেকের অফিসে ম্যারাথন তল্লাশি চালানোর পরে রবিবার রাতে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। সোমবার তাঁকে আদালতে তোলা হবে বলে জানা গিয়েছে। ইডির তরফে জানা গিয়েছে অয়নের বয়ানে বিস্তর অসঙ্গতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। জানা গিয়েছে অ্যাডমিট, ওএমআর শিট সহ নিয়োগ সংক্রান্ত নথি পাওয়া গিয়েহে তাঁর অফিসে। এছাড়াও একাধিক কম্পিউটার থেকে ডিজিটাল তথ্য সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা। গ্রেফতারির পরে সিজিও কমপ্লেক্সে আনা হয় ধৃতকে।জানা গিয়েছে, গতকাল রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ তাঁকে নিয়ে আসা হয় সিজিও কমপ্লেক্সে। আজ ব্যাংকশাল কোর্টে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁকে। জানা গিয়েছে, ৫০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের ব্যাঙ্ক লেনদেন, স্কুল নিয়োগ পরীক্ষার ওএমআর শিট, প্রার্থীদের প্রবেশপত্র, প্রার্থীদের নামের তালিকা, রাজ্য জুড়ে কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০টি পুরসংস্থায় নিয়োগ সংক্রান্ত নথি উদ্ধার হয়েছে অয়নের বাড়ি এবং অফিস থেকে। ইডির দাবি, শুধু এসএসসি নয়, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে রাজ্যের একাধিক জেলার পুরসভাতেও চাকরি পেয়েছেন অযোগ্য চাকরি প্রার্থীরা। এই কাণ্ডে জড়িত অয়ন।
জানা গিয়েছে, সল্টলেকের এফডি ব্লকের ৩৮৮ নম্বর বাড়িতে ভাড়া থাকেন শান্তনু ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন। ১৮ মার্চ দুপুর ৩টে নাগাদ ইডির ৬ প্রতিনিধির একটি দল তাঁর বাড়িতে যায়। ইডির দাবি, শান্তনুর হোটেল, রিসর্ট-সহ অন্যান্য ব্যবসা দেখভাল করতেন অয়ন। এহেন অয়নের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নথি যাচাইয়ের পর ইডি আধিকারিকরা মনে করছেন, রাজ্যে যেভাবে এসএসসির নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড সংগঠিত হয়েছে, ঠিক সেইভাবে রাজ্যের একাধিক পৌরসভাগুলিতেও টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। অয়ন শীলের অফিসের একটি কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার একাধিক পুরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি এবং নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে।
এতগুলি পুরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত নথি পেশায় একজন প্রোমোটার অয়নের বাড়িতে এলো কীভাবে তা খতিয়ে দেখবেন ইডি আধিকারিকরা। পাশাপশি ৩৭ ঘণ্টার তল্লাশি অভিযানে ইডির নজর ছিল অয়ন শীলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত হিসেবের দিকেও। অয়ন শীলের কম্পিউটার এবং মোবাইল থেকে অনেক আর্থিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ইডির মতে, এই লেনদেনের পরিমাণ ৬০ কোটি টাকা ছাড়াতে পারে। ওই লেনদেনের মধ্যে কত টাকা নিয়োগ দুর্নীতির, সেই ব্যাপারে জানতেই অয়নকে টানা জেরা করা হয়। এই দুর্নীতির ব্যাপারে অয়ন শীলের সঙ্গে কুন্তল ঘোষ ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগাযোগ ঘিরেও চলছে তদন্ত।