প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- মণিপুরে অশান্তিতে বাঙলার অনেকে আটকে পড়েছেন। এই পরিস্থিতে তাঁদের রাজ্যে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, সে রাজ্যের সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে আটকে পড়া বাংলা বাসিন্দাদের ফিরিয়ে আনার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিয়েছে রাজ্য সরকার।তফসিলি জাতির মর্যাদা পেতে চেয়ে মেটেই জনজাতির বিক্ষোভে কয়েক সপ্তাহ ধরে অশান্ত উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুর | অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সেখানে। রাস্তা শুনশান, অশান্তি এড়াতে পথে চলছে সেনাবাহিনীর টহল। দেখামাত্র গুলির নির্দেশ জারি হয়েছে। বন্ধ ট্রেন চলাচল। সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ৫৪ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রাণহানির আশঙ্কায় মানুষজন রাজ্য ছেড়ে পালাচ্ছেন অসম ও অন্যান্য প্রতিবেশী রাজ্যে। মণিপুরের এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগপ্রকাশ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । শনিবার টুইটে তিনি উদ্বেগের কথা জানিয়ে এ রাজ্যের বাসিন্দাদের উদ্ধারে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন। চালু করলেন হেল্পলাইন নম্বর। যাঁরা অশান্ত মণিপুর থেকে বাংলায় ফিরে আসতে চান, তাঁরা ওই নম্বরে যোগাযোগ করলে সাহায্য পাবেন। মুখ্যসচিবকে তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন, মণিপুর সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে মানুষজনকে উদ্ধার করতে হবে।শনিবার তিনি টুইট করে জানিয়েছেন, ‘ মণিপুর থেকে আমরা যে ধরনের খবর পাচ্ছি তাতে গভীরভাবে ব্যথিত। আমি মণিপুরের মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত অন্যরা এখন সেখানে আটকা পড়েছে। বাংলার সরকার রাজ্যের জনগণের পাশে দাঁড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং মণিপুর সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে সেখানে আটকে পড়া বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুখ্যসচিবকে পুরো প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করতে, দুর্দশা ও হতাশাগ্রস্ত মানুষকে সাহায্য করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা সব সময় জনগণের পাশে আছি। সবাইকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
মণিপুরে আটকে পড়া বাংলার বাসিন্দাদের জন্য হেল্পলাইন চালু করেছে রাজ্য সরকার। সেই হেল্পলাইন নম্বরগুলি হল, 033-22143526 ও 033-22535185।বেশ কয়েকদিন ধরেই জাতিগত হিংসার অশান্ত মণিপুর। পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে হলেও বিক্ষিপ্তভাবে হিংসার ঘটনা ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে শান্তি বজায় রাখতে আরও বেশি সংখ্যক সেনা জওয়ান পাঠিয়েছে কেন্দ্র। বর্তমানে ভারতীয় সেনা এবং অসম রাইফেলসের প্রায় ১০ হাজার সেনা জওয়ান মোতায়েন রয়েছে বলে সূত্রের খবর। শনিবারই হিংসায় মৃতের সংখ্যা সরকারি ভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। হিংসায় এখনও পর্যন্ত মোট ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে চূড়াচাঁদপুর জেলায় ও পূর্ব ইম্ফল জেলায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। পশ্চিম ইম্ফলে মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের।