প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সোমবার প্রসিডেন্সি জেল থেকে আলিপুর সি জে এম আদালতে পেশের সময় চমক দিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আদালত চত্বরে এদিন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে পুলিশের গাড়ি থেকে নামার সময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে প্রশ্ন করেন। তখনই কালক্ষেপ না করে রীতিমত ক্ষোভ উগরে দেন অপসারিত তৃণমূল মহাসচিব। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি ৩০০ দিনের বেশি বিনা বিচারে আটকে আছি, সেটা নিয়ে বলুন।’সোমবার দুপুরে পার্থকে নিয়ে পুলিশের গাড়ি আদালত চত্বরে পৌঁছতেই অভিষেককে নিয়ে তাঁর বক্তব্য জানতে চায় সংবাদমাধ্যম। পার্থকে লক্ষ্য করে দু’টি কথা বলা হয়। এক, কুন্তল ঘোষের চিঠির মামলায় অভিষেককে সাড়ে ন’ঘণ্টা জেরা করেছে সিবিআই। দুই, জেরার পর অভিষেক বলেছেন, ‘রেজাল্ট জিরো’। গাড়ি থেকে নামতে নামতে পার্থ ওই দু’টি কথাই শোনেন। গাড়ি থেকে নেমে জবাব দেন। তবে জবাব দেওয়ার সময় দৃশ্যতই বিরক্তি ঝরে পড়ে তাঁর গলায়। পার্থ বলেন, ‘‘আরে আমরা ৩০০ দিনের উপরে বিনা বিচারে আছি, সেটা নিয়ে বলুন। ৩০০ দিনের উপর বিনা বিচারে আছি আমি একজন বন্দি।’’
একদা দলের কনিষ্ঠ, অভিষেককে নিয়ে এর আগেও বিশেষ কথা বলেননি পার্থ। বেশির ভাগ সময়েই হয় প্রসঙ্গ এড়িয়ে দলের কথা বলেছেন। তবে সম্প্রতি দু’বার অভিষেক প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছিল পার্থকে। অভিষেকের নবজোয়ার কর্মসূচি প্রসঙ্গে পার্থ বলেছিলেন, ‘‘১০০ শতাংশ সফল এই কর্মসূচি।’’ আবার নবজোয়ার যাত্রার শুরুতে পার্থকে এ-ও বলতে শোনা যায় যে, ‘‘আমি চাই অভিষেক সফল হোক।’’ তবে সোমবার আবার অভিষেক প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেন তিনি।কেন হঠাৎ এ দিন ক্ষোভ উগরে দিলেন পার্থ? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্রীয় এজেন্সির জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে জোর চর্চা হচ্ছে। সরব হয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। অনুব্রত মণ্ডল জেলে থাকলেও সপদে বহাল রয়েছেন। তাঁকে ‘বীর’ বলে সম্বোধন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুব্রতর কন্যা সুকন্যা মণ্ডলও গরু পাচার মামলায় জেলে রয়েছেন। তাও সুকন্যার গ্রেফতারি নিয়ে জয় শাহ-কে নিশানা করে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ অভিষেক। এত কিছু সত্ত্বেও পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে সুর নরম করেননি মমতা বা অভিষেক। উল্টে দলের স্বচ্ছতার প্রশ্নে পার্থর বহিষ্কারকেই হাতিয়ার করেছেন তৃণমূল হাইকমান্ড। মনে করা হচ্ছে এ জন্যই এদিন হতাশা উগরে দিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী।