Breaking News

উচ্চমাধ্যমিকের মেধাতালিকায় সপ্তম হয়ে সদ্য রূপান্তরকামী শরণ্যা শোনালেন উত্তরণের কথা!

দেবরীনা মণ্ডল সাহা :- উচ্চমাধ্যমিকে মেধা তালিকায় সপ্তম স্থান,একাদশ শ্রেণিতে রূপান্তরিত হন তিনি। শরণ্য থেকে শরণ্যার হওয়ার উত্তরণ। আর হুগলির জনাইয়ের রূপান্তরকামী শরণ্যাই এবার উচ্চ মাধ্যমিকে সপ্তম স্থান অধিকার করেছেন। রূপান্তরকামী হয়ে ওঠার কাহিনি জানালেন উচ্চমাধ্যমিকে ৪৯০ নম্বর পাওয়া শরণ্যা।প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সৌরভ ও ঘরকন্যা সামলানো দেবস্মিতার প্রথম সন্তান শরণ্য। ছোট থেকে আর পাঁচটা ছেলের মতোই চলছিল শরণ্যের জীবন। হুগলির জনাই ট্রেনিং স্কুলের খাতাতেও তাঁর নাম ছিল শরণ্য। কিন্তু ষষ্ঠ সপ্তম শ্রেণিতে ওঠার পর থেকেই শরণ্য বুঝেছিলেন তাঁর শরীরী ভাষা। আসলে পুরুষের শরীরে জন্ম হলেও তিনি যে একজন নারী! সেকথা অবশ্য প্রথমেই তিনি তাঁর বাবা-মাকে জানান। সমাজের আর পাঁচটা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মতো শরণ্যার বাড়িতে আকাশ ভেঙে পড়েনি কারোর মাথায়। শরণ্যার আবেগকেই প্রাধান্য দিয়েছিল শিক্ষক পরিবার। প্রমাণ দিয়েছিলেন, একজন শিক্ষক, সমাজ গড়ার কারিগরের ঠিক কী ভূমিকা পালন করতে হয়। এরপর শরণ্যের শুরু হয় শরণ্যা হয়ে ওঠার লড়াই।স্মরণ্য হিসেবে পরীক্ষা দিলেও একজন রূপান্তরকামী ছাত্রী হিসেবে স্কুলের গর্ব স্মরণ্যা। ভবিষ্যতে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা দিতে চায় সে। যদি সেটা সম্ভব না হয় তবে অধ্যাপনাকে পেশা হিসেবে বেছে নেবে সে।স্মরণ্যা জানাচ্ছে, সিভিল সার্ভিস পাশ করলে হাতে ক্ষমতা থাকবে। সেক্ষেত্রে যে সমস্ত নারী-পুরুষ রূপান্তরিত রয়েছেন, তাদের অধিকার ও সম্মান রক্ষার জন্য লড়াই করাটা অনেক সহজ হবে। আর তা না হলে অধ্যাপনা বেছে নেবে।

অধ্যাপনার মাধ্যমে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলবেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে। যাতে সমাজের সমস্ত লিঙ্গের মানুষ সসম্মানে মানে বেঁচে থাকতে পারে। স্মরণ্যা আরও জানায় রূপান্তরকামী হওয়ার দরুণ তাকে অনেক সময় অনেক কটু কথার শিকার হতে হয়েছে। কিন্তু তার বাবা, মা, ঠাকুরদা, স্কুলের প্রধান শিক্ষক-সহ অন্যান্য সহশিক্ষকরা এবং সহপাঠীরা তার পাশে থেকে সবসময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।স্মরণ্যার বাবা জানান, তারা কখনওই মেয়ের এই রূপান্তরকামী হওয়ার যে ইচ্ছা তাতে বাধা দেননি বরং জীবনে এগিয়ে যাওয়ার পথে সব সময় পাশে দাঁড়িয়েছেন। জনাই ট্রেনিং হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রজত কুন্ডু বলছেন, ”স্মরণ্য এখন আমাদের কাছে স্মরণ্যা। অষ্টম শ্রেণিতে পড়াকালীন ও আমাদের স্কুলের প্রত্যাশা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। গত দু’বছর ওর জীবনে অনেক ওঠাপড়া গিয়েছে। সেই জায়গা থেকে ও নিজেকে তুলে ধরতে পেরেছে দেখে আজ আমরা গর্বিত।”
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *