দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :-রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) দফতরে ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। মঙ্গলবার সকালে তাঁকে তলব করা হয়েছিল। সেই মতো মঙ্গলবার সকাল ১১টায় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিলেন সুজয়। এই প্রথম বার ইডি দফতরে গেলেন ‘কাকু’।ইডির জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে কি ভয় পাচ্ছেন সুজয়? সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে ‘কাকু’ বলেন, ‘‘আত্মবিশ্বাসী কি না বেরোনোর সময় দেখবেন।’’ইডি আধিকারিকরা তল্লাশি অভিযান চালায় তাঁর বাড়িতে। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি এবং তথ্য হাতে আসে তদন্তকারীদের। এমনকী সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের তিনটি কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ থাকার কথা প্রকাশ্যে চলে আসে। এই তিনটি কোম্পানি মানিলন্ডারিং করত। সেখানে কেন যোগ ছিল কালীঘাটের কাকুর? জানতে চান তদন্তকারীরা। তাপস মণ্ডলের মুখেই প্রথম ‘কালীঘাটের কাকু’র কথা শোনা যায়। গোপাল দলপতির মুখেও ‘কাকু’র নাম শোনা গিয়েছিল। তখন থেকেই গোয়েন্দাদের আতসকাচের তলায় আসেন সুজয়কৃষ্ণ।ইডি সূত্রে খবর, এই কোম্পানিগুলির আধিকারিকদেরও জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। তলব করে তাদের যে বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে সেগুলি সামনে রেখেই আজ, মঙ্গলবার কালীঘাটের কাকুকে জিজ্ঞাসা করা হবে। সিবিআই সুজয়কে দু’বার তলব করেছিল।
প্রথমবার হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দ্বিতীয়বার নিজের আইনজীবীকে দিয়ে নথিপত্র পাঠিয়েছিলেন। তখন সুজয় বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে কিছু নথি চাওয়া হয়েছিল। সেগুলি তিনি আইনজীবী মারফত পাঠিয়েও দিয়েছেন। সুজয় দাবি করেছিলেন, তাঁর স্ত্রী–কন্যার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথিও তিনি পাঠিয়েছেন।গত ২০ মে সুজয়ের বেহালার ফকিরপাড়া রোডের ফ্ল্যাট, বাড়ি, অফিস-সহ বহু জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। ওই দিনই নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। সুজয় এক সময় অভিষেকের অফিসে কাজ করতেন। ‘কাকু’র সঙ্গে সংযোগ রয়েছে এমন ৩টি সংস্থাতেও তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। সেই সংস্থার মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করা হয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই ৩টি সংস্থার মধ্যে একটি সংস্থা বিশেষ করে নজরে রয়েছে তদন্তকারীদের। সেই সংস্থা ‘কালীঘাটের কাকু’ নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে তদন্তকারীদের ধারণা। ওই সংস্থাগুলির ডিরেক্টর এবং অ্যাকাউন্টট্যান্টদের তলব করা হয় আগেই। এর পরেই মঙ্গলবার তলব করা হয় সুজয়কে। নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিয়ন্ত্রণে থাকা সংস্থার কাছ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা মূল্যের জমিতে বিনিয়োগ করেছিলেন কাকু, এমনটাই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। এ ছাড়াও নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে উঠে আসা বেশ কিছু তথ্য নিয়ে সুজয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে ইডি সূত্রে খবর।