Breaking News

খিদের যন্ত্রণায় মিষ্টি খাওয়ার ‘শাস্তি’, অনাথ নাবালিকার পিঠে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা কাকিমার!গ্রেফতার অভিযুক্ত

দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :-মা-বাবাকে হারিয়েছিল ছোটবেলায়। কাকা-কাকিমার কাছে থাকতে থাকতে কৈশোর যেন হয়ে উঠেছে আতঙ্কময়। এক অসহায় নাবালিকার উপর অমানবিক অত্যাচারের ঘটনা প্রকাশ্যে চলে এল। আর তাতে শিউরে উঠছেন সকলে। অভিযোগ, হুগলির গোঘাট থানা এলাকার বাসিন্দা নাবালিকার উপর মারধর, না খেতে দেওয়া, জোর করে কাজ করিয়ে উপোস করিয়ে রাখা হয় মেয়েটিকে। এখানেই অত্যাচার থেমে নেই। পিঠে-সহ প্রায় সারা অঙ্গে গরম খুন্তির ছ্যাঁকার পর ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ কাকিমার বিরুদ্ধে। আর সেই ছ্যাঁকায় গোটা পিঠ পুড়ে গিয়ে বড় বড় ফোসকা। যন্ত্রণায় ছটফট করলেও মুখে কিছু বলা যাবেই না। কারণ সেই অসম্ভব আতঙ্ক। ফের অত্যাচার, উপোস থাকা। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তড়িঘড়ি গোঘাট থানার ওসি শৈলেন্দ্রনাথ উপাধ্যায় নিজেই উদ্যোগ নিয়ে এই নাবালিকাকে উদ্ধার করে আনেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত কাকিমাকে। সেইসঙ্গে ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে এনে তার থাকা-খাওয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়। শেষে ওই নাবালিকাকে তার মামারবাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। পাশাপাশি ওই নাবালিকার যাতে নির্ভাবনায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, সেই ব্যবস্থাও করে দেন গোঘাট থানার ওসি। ওই নাবালিকার বাবা বেশ কয়েক বছর আগেই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। ওই নাবালিকা যখন খুব ছোট তখনই, বছর দশেক আগেই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন ওই নাবালিকার মা। তার আর কোনও খোঁজ নেই। দাদু ও ঠাকুমার কাছেই থাকত ওই নাবালিকা। কিন্তু দাদুও কয়েক বছর হল মারা গিয়েছে। বাড়িতে তাই কাকু-কাকিমার ফাইফরমাশ খেটে কোনওরকমে দিন কাটত গোঘাটের ভগবতী বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পাঠরত ওই ছাত্রীর। ওই নাবালিকার পড়াশোনা করার ইচ্ছে থাকলেও, বাড়ির সমস্ত কাজ থেকে দোকান-বাজার সবই তাকে দিয়ে করাত অভিযুক্ত কাকিমা সারদামণি চট্টোপাধ্যায়|

এমনকি কাজের একটু উনিশ-বিশ হলেই খেতে দেওয়া হত না ওই নাবালিকাকে। উপোস করিয়ে রাখা হত। কিন্তু ভয়ে অত্যাচারের কোনও প্রতিবাদ করতে পারত না সে। বাইরের কাউকেই একথা বলতে পারত না সে। কষ্ট সহ্য করে বাড়িতেই থাকত সে।মঙ্গলবারও এরকম সারাদিন উপোস ছিল ওই নাবালিকা। সারাদিন-ই তাকে খেতে দেয়নি কাকু-কাকিমা। বিকালের দিকে খিদেতে ছটফট করতে থাকে ওই নাবালিকা। বাধ্য হয়েই খিদে সহ্য করতে না পেরে ফ্রিজ খুলে দুটো মিষ্টি খেয়ে নেয় সে। আর তাতেই কাকিমা সারদামণি চট্টোপাধ্য়ায় পাশবিক অত্যাচার চালায় ছোট্ট মেয়েটির উপর। মারধরের পাশাপাশি খুন্তি গরম করে পিঠে ছ্যাঁকা দিয়ে দেয়। ছ্যাঁকার পর ছ্যাঁকা দিতে থাকে। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে ওই নাবালিকা। পুড়ে যায় পিঠ। পিঠে বড় বড় ফোসকা পড়ে যায়। বুধবার ওই অবস্থাতেই সে বিদ্যালয়ে যায়।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *