Breaking News

সুতপাকে নৃশংস খুনে ঐতিহাসিক রায়!প্রাক্তন প্রেমিকের ফাঁসির সাজা শোনাল আদালত

দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- সুতপা চৌধুরী হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হওয়া সুশান্ত চৌধুরীকে ফাঁসির সাজা শোনাল আদালত। বৃহস্পতিবার বহরমপুরের তৃতীয় দ্রুত নিষ্পত্তি (ফাস্ট ট্র্যাক) আদালতের অতিরিক্ত ও জেলা দায়রা বিচারক সন্তোষকুমার পাঠক সুশান্ত চৌধুরীকে ফাঁসির সাজা শোনান। আদালত কক্ষ ছাড়ার আগে বার বার পরিজনদের দিকে তাকিয়ে কেঁদে ফেলেন ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামি সুশান্ত চৌধুরী। রায় শোনার পর সুতপার বাবা স্বাধীন চৌধুরী বলেন, “আমার মেয়ের আত্মা আজকে শান্তি পাবে। এই ধরনের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড না হলে এগুলির পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা থাকত। এই রায় ভবিষ্যতে দুষ্কৃতীদের মনে ভয় সৃষ্টি করবে।”২০২২ সালের ২ রাতে মেসে ফেরার পথে প্রাক্তন প্রেমিকের হাতে খুন হয়ে যান সুতপা। বহরমপুরের সুইমিং ক্লাবের গলিতে প্রাকাশ্য রাস্তায় কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল সুতপাকে। ঘটনার বিভৎসতা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা রাজ্যকে। পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যেতে গিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। ধরা পড়ে গিয়েছিল সুশান্ত। ঘটনার ৩৫ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা করে পুলিশ। তারপর থেকে চলছিল মামলা। নেওয়া হয় ৩৪ জনের সাক্ষী। অবশেষে ১৬ মাসের মধ্যে এল আদালতের রায়।
মৃতার বাবা-সহ সাক্ষ্য দেন ২০২২ সালের ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, সাংবাদিক, একটি ই-কমার্স সংস্থার কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী এবং পুলিশ। সমস্ত পক্ষের বক্তব্য শোনার পর সুশান্তকেই দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত।উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২ মে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের গোরাবাজার এলাকায় সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিট নাগাদ শহিদ সূর্য সেন রোড দিয়ে মেসে ফিরছিলেন সুতপা। সিসি ক্যামেরাতে দেখা যায় তাঁকে অনুসরণ করছেন এক যুবক। পরে ওই যুবকের পরিচয় সামনে আসে। তিনি সুশান্ত। মেসের দরজার সামনেই সুতপার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপান সুতপাকে। হাতে থাকা নকল পিস্তল উঁচিয়ে আশপাশে ভিড় জমাতে থাকা স্থানীয়দের দিকে তেড়ে যান সুশান্ত। চোখের সামনে খুন হতে দেখেও আগ্নেয়াস্ত্রের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসার সাহস করেননি। এমন নৃশংস ঘটনায় রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। পরের দিনই সমশেরগঞ্জ থেকে গ্রেফতার হন সুশান্ত। জানা যায়, সুতপার পূর্বপরিচিত তিনি। সম্পর্কের জটিলতার জেরে খুন করেন প্রাক্তন প্রেমিকাকে।ঘটনার ৭৫ দিনের মাথায় বহরমপুর আদালতে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। অভিযুক্ত সুশান্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন)-সহ একাধিক ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়। আদালতে জমা পড়ে ৩৮৩ পাতার চার্জশিট।সুতপার পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়, ২০১৭ সাল থেকেই একাধিক বার তাঁদের মেয়ের উপর চাপ দিয়েছেন সুশান্ত। অন্য দিকে, পুলিশি তদন্তে উঠে আসে সুতপার উপর রাগ ও হতাশা থেকে এই খুন করেন অভিযুক্ত। পাশাপাশি পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে বার বার মিথ্যা বয়ান দেওয়ার চেষ্টা করেন বলেও সুশান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। সুশান্তর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল সুতপা চৌধুরীর। সুতপা সেই সম্পর্ক ভেঙে বেরিয়ে আসায় এই কাণ্ড ঘটান অভিযুক্ত।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *