দেবেরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :-রেশন বণ্টন দুর্নীতি কাণ্ডে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে জেরা জারি রেখেছে ইডি। প্রাথমিকভাবে বাকিবুরের মুখোমুখি বসিয়ে রেখে বালুকে জেরা করার পরিকল্পনা ছিল ইডির। তবে তা সম্ভব হয়নি। তবে বাকিবুরের বয়ানের ভিত্তিতেই নাকি বালুকে জেরা করা হচ্ছে। এর আগে বাকিবুর এবং বালুর আর্থিক লেনদেনের সূত্র পেয়েছিল ইডি। বাকিবুরের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে ইডি জানতে পারে দুই দফায় বালুকে ৮০ লাখ টাকা দিয়েছিল সে। তবে জেরার সময় বাকিবুর বলেছিল, সেই টাকা নাকি মন্ত্রীর অনুরোধে ঋণ হিসেবে দিয়েছিলেন বাকিবুর। এই নিয়ে জেরা করা হচ্ছে জ্যোতিপ্রিয়কে। তা ছাড়াও রেশনে খাদ্যশস্যের পরিমাণ কমানো নিয়ে বাকিবুর যে বয়ান ইডিকে দিয়েছে, তার ভিত্তিতেও মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ বলে জানা যাচ্ছে | গত ১৪ অক্টোবর রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয় বাকিবুরকে। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এই মামলাতেই গ্রেফতার হন জ্যোতিপ্রিয়। মন্ত্রীর গ্রেফতারির সময় ইডি হেফাজতেই ছিলেন বাকিবুর। ইডি সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে তারা ঠিক করেছিল যে, বালু এবং বাকিবুরকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কিন্তু মন্ত্রী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় ইডির প্রাথমিক পরিকল্পনা সফল হয়নি। ১৪ দিনের ইডি হেফাজতের পর বাকিবুর এখন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন। অন্য দিকে, কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর এখন ইডি হেফাজতে রয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়। মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গত ২৩ অক্টোবর ইডির সামনে দেওয়া বাকিবুরের একটি বয়ানকেই হাতিয়ার করছেন তদন্তকারীরা। বাকিবুরের সংস্থার সঙ্গে মন্ত্রীর পরিবারের যোগাযোগের বিষয়টি আগেই জানতে পেরেছিল ইডি। তদন্তকারীরা এ-ও জানতে পারেন যে, মোট তিনটি সংস্থায় শেয়ার কেনাবেচার মাধ্যমে মোটা টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন বাকিবুর। বাকিবুর অবশ্য জেরার মুখে জানান, জ্যোতিপ্রিয়ের অনুরোধে তিনি ওই বিপুল পরিমাণ টাকা ধার হিসাবে দিয়েছিলেন। এই বয়ানকে সামনে রেখেই বক্তব্যের সত্যাসত্য যাচাই করতে মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে ইডি।এদিকে সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বাকিবুর রহমানের অন্তত ১০০ কোটির সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে। নামে – বেনামে, আত্মীয়দের নামে এই বিপুল সম্পত্তি। এগুলি রেশন দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করার জন্য করা হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, অন্তত ৬টি সংস্থায় শেয়ার রয়েছে বাকিবুরের। সেই শেয়ার মিলিয়েই বাকিবুরের সম্পত্তি প্রায় ৫০ কোটি। নিউ টাউন, রাজারহাট, পার্কস্ট্রিটে একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে তার। বাকিবুরের একাধিক হোটেল, পানশালাও রয়েছে। বিদেশেও তার সম্পত্তি রয়েছে বলে খবর। প্রসঙ্গত, বাকিবুরের ফ্ল্যাট থেকে সরকারি দফতরের প্রচুর স্ট্য়াম্প পাওয়া গিয়েছিল। সেই স্ট্যাম্প কী জন্য ব্যবহার করা হত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই আবহে বকিবুরের দুর্নীতির সঙ্গে মন্ত্রী যোগের অভিযোগ বারংবার উঠেছে।