প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- জয়নগরে ত্রাণ নিয়ে ঢুকতে পারবে সিপিএম। অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। দলুইখাকি গ্রামে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের জন্য সিপিএম-এর পক্ষ থেকে সোমবার মামলা দায়ের করেন বাম নেতা তথা আইনজীবী সায়ন চক্রবর্তী। পুলিশের অতি সক্রিয়তার অভিযোগ করে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে দ্বারস্থ হন। সেই মামলাতেই এবার হাইকোর্ট অনুমতি দিল।এদিন আদালত জানিয়েছে, জয়নগরের দলুয়াখাঁকি গ্রামে যেতে পারবেন সিপিআইএম নেতারা। ৫ জনের বেশি ত্রাণ দেওয়ার জন্য গ্রামে যেতে পারবেন না। কিন্তু সেখানে কোনও রাজনৈতিক বক্তব্য থাকবে না। উসকানিও দেওয়া যাবে না। কোনও সভা করা যাবে না। নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে গ্রামে যাওয়ার আগে জয়নগর থানাকে জানাতে হবে। ত্রাণ দেওয়ার সময় পুলিশও সঙ্গে যাবে। পাশাপাশি গ্রামে প্রবেশের ক্ষেত্রে গ্রামেরই বাসিন্দা মহিলাদের বাধা দেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে তা নিয়ে আদালতে রিপোর্ট দেবে জেলার পুলিশ সুপার।এদিন আদালত এও জানিয়েছে, দলের মোট চারজন যেতে পারবেন ত্রাণ নিয়ে। তাঁদের সঙ্গে থাকবেন চার পুলিশ আধিকারিক। উল্লেখ্য, জয়নগরে তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্করের মৃত্যুর পর সিপিএম-কে কাঠগড়ায় তুলে গোটা গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পালিয়ে গিয়ে প্রাণটুকু রক্ষা করতে পেরেছিলেন গ্রামবাসী। বাকি যাবতীয় জিনিসপত্র সব নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শাসকদলের বিরুদ্ধে। এরপর সেখানে সুজন চক্রবর্তী, কান্তি গঙ্গোপাধ্য়ায়, সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়রা ত্রাণ নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় তাঁদের। পরপর দু’বার এই ঘটনা ঘটে। গতকালও পুলিশি বাধার মুখে পড়েন সিপিএম নেতারা সহ মহিলা সংগঠন। গ্রামে ঢুকতে গেলে পুরুষ পুলিশ মহিলাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। সিপিএম নেতা সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “পুলিশ তৃণমূলের ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয়। তাঁদের ক্ষেত্রে অতি সক্রিয়।” এই সকল অভিযোগ নিয়ে আজ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সায়ন। বিচারপতি পুলিশ সুপারের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন।প্রসঙ্গত, গত সোমবার, ১৩ নভেম্বর ভোরে নমাজ পড়তে যাওয়ার পথে দুষ্কৃতীদের খুন হন দলুয়াখাঁকির তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি সইফউদ্দিন লস্কর। এই ঘটনায় উত্তেজনার মাঝেই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গণপিটুনিতে মৃত্যু হয় অন্যতম অভিযুক্তের। এর পর পালটা এলাকায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পুড়ে ছাই হয়ে যায় বহু বাড়ি। রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে দু দলের মাঝে পড়ে ভিটেহারা হন দলুয়াখাঁকির বহু নিরীহ মানুষ। তাঁদের পাশে দাঁড়াতেই ছুটে গিয়েছিল বাম নেতৃত্ব। একবার নয়, পর পর দুবার। সেই সময় পুলিশি বাধা পেয়ে ফিরে আসতে হয়েছিল তাঁদের। এবার আদালতের নির্দেশে সেই বাধা কাটল।