দেবরীনা মণ্ডল সাহা:- খারিজ হল মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ। এথিক্স কমিটির সুপারিশ মেনেই ঘুষের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়।মহুয়া মৈত্রের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্শিয়াং থেকে মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়ে লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন তিনি।এমনকি, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে কৃষ্ণনগর থেকে মহুয়া মৈত্রর-ই টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তৃণমূল সুপ্রিমোর কথাতেই এদিন মিলল সেই ইঙ্গিত,জানিয়েছেন, লোকসভায় যা হয়েছে, তা শুনে তিনি স্তম্ভিত।মমতা বলেন, ‘‘মহুয়ার বিষয়ে আমাদের ‘ইন্ডিয়া’র শরিকেরা আরও খানিকটা সময় চেয়েছিলেন। ৪৯৫ পৃষ্ঠার একটি রিপোর্ট, সেটা পড়তে সময় লাগবে না? দু’ঘণ্টার মধ্যে আলোচনা শুরু করা হল। আধ ঘণ্টায় ৪৯৫ পাতার আলোচনা হয়েও গেল! কী করে হল আমি বুঝলাম না। মহুয়ার সাংসদ পদও খারিজ করে দেওয়া হল। আমি স্তম্ভিত।’’
লোকসভায় মহুয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মমতা। পাশাপাশি, দল মহুয়ার পাশে আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। মমতা বলেন,‘‘দল মহুয়ার পাশে আছে। ছিল। এই ঘটনা থেকে বিজেপির প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি আরও এক বার প্রমাণিত। মহুয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে কিছু বলার সুযোগই দেওয়া হল না। আমি এর তীব্র বিরোধিতা করছি।’’সাংবাদিকদের মহুয়াকে লোকসভা ভোটে টিকিট দেওয়া বা প্রার্থী করার প্রশ্নে মমতা বলেন, ‘না হওয়ার কী আছে! ওকে তো কৃষ্ণনগর জেলার সভাপতি করা হয়েছে। দল ওর পিছনে আছে। আর এটা তো ধ্বনি ভোটে হয়েছে। হাত তুলে ভোট । চেঁচিয়ে ভোট। কোনওরকম সুযোগ না দিয়ে। কোনও ভোট রেকর্ড হয়নি। গণতন্ত্রের বাইপাস সার্জারি করেছে বিজেপি!’ মহুয়া যে ২০২৪ লোকসভা ভোটে কৃষ্ণনগর থেকে ফের জিতবেন, জোরের সঙ্গে সেকথা বলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও।
সাংসদ পদ খোয়ানোর পর সংসদের বাইরে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মহুয়া মৈত্র। বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদের পাশে দাঁড়ান কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী। সমাজবাদী পার্টি, ন্যাশনাল কনফারেন্স পার্টিও মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজের প্রতিবাদ করেন।তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনার শেষ দেখে তিনি ছাড়বেন। আগামী ৩০ বছর লোকসভার ভিতরে এবং বাইরে লড়াই করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত সাংসদ।‘ জোটের নেতৃত্বদের পাশে দাঁড়িয়ে মহুয়া হুংকার দেন, “২ জন নাগরিকের লিখিত বক্তব্যের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত। আমার বিরুদ্ধে টাকা বা উপহার নেওয়ার কোনও প্রমাণ নেই। আমি নিশ্চিত, কালই বাড়িতে সিবিআই আসবে। আগামী ৬ মাস ধরে হেনস্থা করবে। আমার বয়স ৪৯ বছর, আরও ৩০ বছর লড়াই করব। আমি ফিরে আসব।”মহুয়া মৈত্রের পাশে দাঁড়ালেন রাজ্যের বিরোধীরা। সংসদেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী তাঁর পক্ষে সওয়াল করেছেন। কলকাতায় বসে তাঁর বহিষ্কারকে অন্যায় বলে মন্তব্য করলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। বিরোধীদের বক্তব্যের সাধারণ স্পষ্ট লাইন, ‘অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে মহুয়া মৈত্রকে।’
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal