দেবরীনা মণ্ডল সাহা,কলকাতা :- আন্দোলনের ১০০০তম দিনে ধর্না মঞ্চে মাথা মুড়িয়ে প্রতিবাদ করেছেন এক এসএলএসটি মহিলা চাকরিপ্রার্থী। কান্নায় ভেঙে পড়ে তাঁর আবেদন ছিল, অবিলম্বে তাঁর মতো চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হোক। তাঁদের কথা শুনুন রাজ্য সরকার। আর তাঁকে দেখতেই শাসকদলের তরফে কুণাল ঘোষ ধর্নামঞ্চে উপস্থিত হতেই উঠল ‘চোর-চোর’ স্লোগান। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা অন্যতম মুখপাত্রের দিকে এক পাটি জুতোও উড়ে গেল। যদিও তার পরেও কুণাল দেখা করলেন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে। বললেন, ‘‘আলোচনা থেকেই সমাধানের পথ আসে। আন্দোলন তো পালিয়ে যাচ্ছে না। গণতান্ত্রিক দেশে আন্দোলন করার অধিকার সবার রয়েছে।’’শনিবার তাঁদের আন্দোলনের ১০০০তম দিনে ধর্মতলার ধরনা মঞ্চে হাজির হয়ে সেই জট খোলার প্রক্রিয়া শুরু করে দিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি আন্দোলনকারীদের পাশে বসেই ফোন করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। ব্রাত্য বসু চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য সময় দিলেন। ১১ তারিখ অর্থাৎ সোমবার দুপুর ৩টের সময় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাবেন চাকরিপ্রার্থীদের ৭ প্রতিনিধি। তাঁদের সঙ্গে নিয়ে যাবেন কুণাল ঘোষই। এভাবে আলোচনার রাস্তা খোলা হল। ন্যায্য চাকরির দাবিতে ১০০০ তম দিনে পড়ল SLST দের আন্দোলন। এতদিনেও সমস্যার সমাধান না হওয়ার হতাশায় এদিন মস্তক মুণ্ডন করেন রাসমনি পাত্র নামে এক চাকরিপ্রার্থী। এরপর তাঁদের আন্দোলন মঞ্চ কার্যত রাজনৈতিক সভার রূপ নেয়। সেখানে ছুটে যান কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচি, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। কুণালকে দেখেই ক্ষোভে ফুঁসতে ফুঁসতে কৌস্তভ বলেন, “সরকারি দলের প্রতিনিধিরা এখানে কী নাটক করতে এসেছেন? যদি হিম্মত থাকে তাহলে সরকারের কাউকে নিয়োগপত্র দিয়ে পাঠাক। আসলে একটাই কথা বলতে হবে চোর ধরো আর জেলে ভরো।” এদিকে কুণাল যখন ঢুকছেন তখন মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন বিমান বসু। তখনই কুনাল ঘোষকে একেবারে বিমানের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। তবে ধর্না মঞ্চে যাওয়ার পরে দীর্ঘক্ষণ চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় কুণালকে। যদিও তখনও পিছন থেকে উঠছে লাগাতার স্লোগান। তবে চাকরিপ্রার্থীদের মতে, নিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে। তাই শুধু কথা বলে কিছু হবে না। চাই দ্রুত নিয়োগ। এখন দেখার কুণাল আগমণে ধরনা মঞ্চে চাকরিপ্রার্থীদের মনে নতুন কোনও আশার সঞ্চার হয় কি না! সূত্রের খবর, এদিন মঞ্চ থেকে দাঁড়িয়েই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন কুণাল। এরপরই এক চাকরিপ্রার্থী বলছেন, “আমরা চাকরির ব্যাপারে আশাবাদী। এখন দেখা যাক কী হয়। আশা রাখছি নতুন বছরেই হয়তো সুখবর পাব।”