প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- উত্তপ্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যাম্পাসে অযোধ্যার অনুষ্ঠান লাইভ স্ট্রিমিং করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ। এরপর স্ক্রিনিংয়ের পক্ষের পড়ুয়ারা গ্রিন জোনে একত্রিত হয়ে বসে পড়ে। দিতে থাকেন রাম-রাম স্লোগান। উল্টো দিক থেকে এগিয়ে আসেন বাম ছাত্র সংগঠনের পড়ুয়ারা। তাঁদের মুখে ‘ইনকিলাব স্লোগান’। ক্যাম্পাসের ভিতরেই কার্যত ধস্তাধস্তি বেধে যায়। অসুস্থ হয়ে পড়েন সহ উপাচার্য অমিতাভ দত্ত। মাথা ফেটেছে সিকিউরিটি হেড মুকুল চন্দ্র দাসের। গেটের বাইরে মোতায়েন পুলিশ।
সূত্রের খবর, রামমন্দির উদ্বোধনের লাইভ স্ট্রিমিং করার জন্য প্রোজেক্টর-সহ অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছিলেন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) সমর্থকেরা। তাঁরা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানও দেন। পাল্টা অতিবাম সংগঠনের ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের বাধা দেন বলে অভিযোগ। স্লোগান, পাল্টা স্লোগানে ক্যাম্পাসে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়। গেরুয়া শিবিরের দাবি, বামেরা তাঁদের উপর হামলাও চালিয়েছে। খবর পেয়ে অধ্যাপকদের অনেকে পৌঁছে যান ৩ নম্বর গেটের সামনে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গেট বন্ধ করে দেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার পরেও চাপা উত্তেজনা রয়েছে ক্যাম্পাসে। অযোধ্যায় মন্দির উদ্বোধনের দিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কোনও কর্মসূচির আয়োজন করা যাবে না। রবিবার এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করে করেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তিতে কর্তৃপক্ষ জানান, সোমবার বিভিন্ন বিভাগের সেমেস্টার-সহ গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা রয়েছে। পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবেই ওই দিন কোনও অনুষ্ঠান বা কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি ‘সৌহার্দ্যপূর্ণ’ পরিবেশ বজায় রাখতেও অনুরোধ করা হয়েছিল বিজ্ঞপ্তিতে।এরপর আজ স্ক্রিনিংয়ের পক্ষের পড়ুয়ারা গ্রিন জোনে একত্রিত হয়ে পড়েন। তখন তাদের প্রথমে নিষেধ করেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারপরও অযোধ্যার স্ক্রিনিংয় চালানোর চেষ্টা করেন তারা। এরপরই বিরোধ বাধে বাম-ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে। তাদের অভিযোগ, যে সকল পড়ুয়ারা এই স্ক্রিনিং করছেন তারা সকলে এবিভিপি করেন। বাম ছাত্র-সংগঠনের সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তারা। পরিষ্কার জানিয়েছেন, তারা যাদবপুরের পড়ুয়া মাত্র। কোনও রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয়। এ দিকে, অযোধ্যার স্ক্রিনিংয়ে বাধা পেতেই ‘রাম-রাম’ স্লোগান দিতে থাকে তারা। অপরদিকে, বামপন্থী ছাত্র সংগঠনও তোলে ‘ইনকিলাব স্লোগান’। অভিযোগ, দুপক্ষের মারামারি চলে। সহ উপাচার্য অমিতাভ দত্ত বাধা দিতে গেল অভিযোগ মার খেতে হয় তাঁকেও। যাঁরা স্ক্রিনিং করতে চেয়েছিল তাঁদের কার্যত মেরে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বামপন্থী পড়ুয়ারদের বিরুদ্ধে।