দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা:- কেন্দ্রীয় বঞ্চনার দাবিতে সুর চড়িয়েছে মুখ্যমন্ত্রী-সহ একাধিক নেতা-মন্ত্রী। দিল্লিতে বসে পালটা ক্যাগ রিপোর্ট উল্লেখ করে বকেয়া টাকা কেন বন্ধ, তা স্পষ্ট করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও সর্বভারতীয় মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া। তার পরেও বুধবার হাওড়ার সাঁতরাগাছির প্রশাসনিক সভা থেকে ফের বঞ্চনার প্রতিবাদে সুর চড়ালেন মমতা। ১০০ দিনের প্রকল্পে বাংলা এক নম্বরে থাকায় টাকা বন্ধ বলেই দাবি তাঁর।কেন্দ্রের ‘বঞ্চনা’। কীভাবে সরকার চলছে? ‘যখন আমার প্রাপ্য টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়, তখন মা-বোনেরা যেভাবে সংসার চালায়, আমিও তেমন ভাবেই সরকার চালাই’, বললেন মুখ্যমন্ত্রী।হাওড়ায় সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘৪৮ ঘন্টা ধরনা মঞ্চে থাকার ফলে আমার কাশিটা বেড়েছে। এখন আমি যখন আপনাদের সামনে বক্তব্য রাখছি তখন আমার টেম্পারেচার ১০১। তাও আমি যখন কথা দিয়েছি তখন এই প্রোগ্রাম আমি ক্যানসেল করি নি। কাল আবার বাজেট আছে’। সঙ্গে হুঁশিয়ারি, ‘এইসব রোগ টোগ, ব্যাথা টাথা আমাকে কখনো কাবু করতে পারে নি। আর পারবেও না।আমি বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই করে বেঁচে আছি। লোভ দেখিয়ে আমাকে কাবু করা যায় না। আমি লাঠি গুলির বিরুদ্ধে লড়াই করে এসেছি। আমি যেদিন মারা যাবো সেদিন আমার নামের পাশে আন্দোলন মানবিকতা লড়াই এর কথা লেখা থাকবে’।তৃণমূল জমানায় হাওড়ায় জেলায় উন্নয়নের খতিয়ে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘আমি যতটা পারছি করছি আমার সাধ্য মতো। আগামিদিনে কি করব, সেটা শুনলে চমকে যাবেন। আমি জমিদার নই, জোতদার নই। আমি সরকারে থাকি একজন সাধারণ নাগরিক হিসাবে। আমি আপনাদের পাহারাদার। আমার একটু সময় লাগবে, কিন্তু আপনাদের মুখে আমি হাসি ফোটাবোই’।
কেন একাধিক প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে রেখেছে কেন্দ্র, তার কারণও স্পষ্ট করে মমতা বলেন, “আমরা MSME, স্কিল ইন্ডাস্ট্রি, গ্রামীণ রাস্তা, ১০০ দিনের কাজ, বাংলার বাড়ি প্রকল্পে এক নম্বরে। তাই প্রকল্পগুলি বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যাঁরা কাজ করেছেন তাঁদের টাকাও দেওয়া হল না।” কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারির সুরে মমতা আরও বলেন, “মনে রাখবেন বাংলা মাথা নত করে না।”প্রাপ্য টাকা না পাওয়ার পরেও কীভাবে সরকার চালাচ্ছেন তিনি, তাও জানান মমতা। বলেন, “বাংলার মা-বোনেরা বিপদে পড়লে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে টাকা বের করেন। মনে রাখবেন আমাকেও সরকার চালাতে হয়। সংসার চালাতে হয়। যখন প্রাপ্য টাকা পাই না, প্রাপ্য টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয় তখন মা-বোনেরা যেভাবে সংসার চালান আমিও চালাই।” রাজ্যবাসীকে মমতার আশ্বাস, “আমি কাউকে বঞ্চিত হতে দেব না। চিরকাল লড়াই করে যাব।”