দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- তৃণমূলের প্রতি একরাশ অভিমান-ক্ষোভ উগরে দিয়ে দল ছাড়লেন তাপস রায়।সোমবার সকালেই তাঁকে বোঝাতে ব্রাত্য বসু ও কুণাল ঘোষ তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও বরফ গলল না। এমনকী, বরানগরের বর্ষিয়ান এই তৃণমূল বিধায়ক বিধান সভায় পৌঁছে দিলেন ইস্তফা। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিলেন ইস্তফা পত্র। সোমবার বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন দলের বিরুদ্ধে। প্রায় ২৩ বছর ধরে বর্ষীয়ান বিধায়ক তাপস রায় ঘাসফুল শিবিরের একনিষ্ঠ সদস্য। বেশ কয়েকবারের বিধায়ক তিনি। কিন্তু সম্প্রতি দলের একাধিক কাজে অসন্তোষ, দলের ভূমিকা নিয়ে অভিমান জমাট বেঁধেছে তাঁর মনে। আর সেই অভিমানের বহিঃপ্রকাশেই বিধায়ক ও দলের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফার সিদ্ধান্ত কার্যকর করেই ফেললেন তিনি। লোকসভা ভোটের আগে তাঁর এই দলত্যাগ নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।
সোমবার বিধানসভার স্পিকারের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেওয়ার পর বেরিয়ে তাপস রায় বলেন, ”তৃণমূলে আমার প্রয়োজন ফুরিয়েছে। দলের একাধিক বিষয়ে আমি আহত হয়েছি, কষ্ট পেয়েছি। সন্দেশখালি থেকে দুর্নীতি – নানা বিষয়ে আমার খারাপ লেগেছে। বুঝেছি, আর যাই হোক, এই দলে থাকা যায় না আর। অপমানিত হয়েছি। তাই আমি ইস্তফা দিলাম বিধায়ক পদ এবং দলের সব পদ থেকে। ১ তারিখই আমি ইস্তফা পাঠিয়েছিলাম। নেত্রীকেও সব জানিয়েছিলাম।” এতদিন ধরে রাজনীতি করছেন, কোনও দিন পুলিশ বাড়িতে আসেনি। অথচ এবার ইডি এল। তা নিয়ে তাপস রায়ের দাবি, ”অন্যান্য দল আমার প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে কিন্তু আমার দল পাশে দাঁড়ায়নি। শাহজাহান ইডির টার্গেট বলে নেত্রী বলছেন, অথচ আমার কথা একটিবারের জন্যও বলেননি।” শুধু বিধায়ক পদই নয়, সিটি কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্যপদ ও সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একটি পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন তাপস রায়। তিনি বলেন, ‘ইডি অভিযানে বিধ্বস্ত আমি ও আমার পরিবার। ভেবেছিলাম মুখ্যমন্ত্রী দাঁড়াবেন। অন্য কারও বাড়িতে গেলে ইডি কড়া নাড়লে বলেন। আমারও স্ত্রী পুত্র রয়েছে। এগুলো হৃদয়কে নাড়াচাড়া দিয়ে যায়।’
এদিকে, তাপসের দলত্যাগের পর থেকেই শুরু হয়েছে গুঞ্জন। এরপর কি তাঁর গন্তব্য বিজেপি? আবার কানাঘুষো এও শোনা যাচ্ছে, উত্তর কলকাতা থেকে নাকি ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন?