দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- টাকা নিয়ে টানাপোড়েনের জের। ভবানীপুরের ব্যবসায়ীকে খুনের পর দেহ বস্তায় ভরে জলের ট্যাঙ্কের নিচে পুঁতে প্লাস্টার করে দেওয়ার অভিযোগ যুবকের বিরুদ্ধে। হাড়হিম করা এই ঘটনার সাক্ষী উত্তর ২৪ পরগনার নিমতা| ইতিমধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই খুনের ঘটনার খবর পেয়ে শিলিগুড়ি থেকে ফিরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখা করলেন খুন হওয়া ব্যবসায়ীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। দীর্ঘক্ষণ পরিবারের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে তিনি জানান, এমন একটি খুনের খবর পেয়ে মিছিল বাতিল করে তিনি নিজের কেন্দ্রে ফিরে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘শিলিগুড়িতে একটা স্যাড নিউজ় পেয়েছিলাম। তাই মিছিল ক্যান্সেল করে চলে এসেছি। সিধেসাধা ব্যবসায়ী ছিল। ওরা পুলিশের কাছে মিসিং ডায়েরি করে। পুলিশ কিছু ক্ষণের মধ্যে গ্রেফতার করেছে। আমি মনে করি এরা ক্রিমিনাল নয়। ক্রিমিনালের চেয়েও বড় ক্রিমিনাল।’’
জানা গিয়েছে, ওই ব্যবসায়ী ভবানীপুরের প্রিয়নাথ মল্লিক লেনের বাসিন্দা। পারিবারিক সূত্রের খবর, দুদিন ধরে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। কোনও জায়গাতেই তাঁর খোঁজ মিলছিল না। ফোনেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করে পরিবার। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি। দুশ্চিন্তায় পড়ে বালিগঞ্জ থানার দ্বারস্থ হয় তার পরিবার। কিন্তু, ব্যবসায়ী যে ওই এলাকাতেই ছিলেন না তা জানা ছিল না পরিবারের সদস্যদের। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, তাঁকে দু’দিন আগেই নিমতায় ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। প্রথমে তাঁর মাথায় উইকেট দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়। তারপর দেহ ঢুকিয়ে দেওয়া হয় জলের ট্যাঙ্কে। কেউ যাতে বুঝতে না পারে তারজন্য দেহ জলের ট্যাঙ্কে ঢোকানোর পরে মাঝরাতেই তা ইঁট দিয়ে গেঁথে ফেলার চেষ্টা করে অভিযুক্ত। তবে প্রতিবেশীদের তৎপরতায় সবকিছু প্রকাশ্যে আসে। পুলিশ জানিয়েছে, বালিগঞ্জ থানার পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায়। শেষে নিমতায় তাঁর ব্যবসায়ীক অংশীদারের বাড়ি থেকে উদ্ধার দেহ। এমন ঘটনার খবর জানতে পেরেই এলাকায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে | মৃতের পরিবার দাবি করেছে, সোমবার ব্যবসায়ী অফিসে গিয়েছিলেন। অফিস থেকে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু, তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। তবে পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, শেষবার ব্যবসায়ীর সঙ্গে তাদের শেষ কথা হয়েছিল দুপুর ৩টে নাগাদ। তারপর অবশ্য আর যোগাযোগ করা যায়নি। বন্ধ হয়ে যায় মোবাইল ফোন। এদিকে, তদন্তে নেমে পুলিশ টাওয়ার লোকেশন ট্রাক করে জানতে শেষবার ফোনটি ছিল শোভাবাজার এলাকায়।প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরেই খুন। বালিগঞ্জ থানার পাশাপাশি তদন্তে নেমেছে লালবাজারের হোমিসাইড ও গুন্ডাদমন শাখা।