নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা :- বিধাননগরের রাজারহাটেও সালিশি সভার নামে অত্যাচারের অভিযোগ উঠল। নাম জড়াল সেই শাসকদল তৃণমূলের এক নেতার। সেই নেতা অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, অভিযোগকারী বিজেপির সমর্থক। তৃণমূলকে কালিমালিপ্ত করতেই মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।সোমবার রাজারহাট থানায় অভিযোগ দায়ের অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েছিলেন গৌতম সরকার নামে এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ, শনিবার রাতে তাঁর বাড়িতে এক দল লোক আসে। সালিশি সভার নাম করে তাঁকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজারহাট-বিষ্ণুপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল পার্টি অফিসে। সেখানে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ | আর যাঁর নেতৃত্বে এ কাজ করা হয়েছে, তিনি রাজারহাট-বিষ্ণুপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য রক্তিম কর।রাজারহাটের ভাতেন্ডার নির্যাতিত ব্যক্তি রাজারহাট থানার পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। আক্রান্ত সপ্তাহখানেক আগে বাবাকে হারান। শ্রাদ্ধানুষ্ঠান শেষ হতে না হতেই এমন ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ওই ব্যক্তি।অভিযুক্ত রক্তিম রাজারহাট-বিষ্ণুপুর এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। তিনি আবার রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর করের ভাইপো হিসেবে পরিচিত। কি নিয়ে বসেছিল সালিশি সভা? জানা গেছে, একটি বেসরকারি ঋণ প্রদানকারী সংস্থা কর্মরত ছিলেন আক্রান্ত ব্যক্তি। ঋণ প্রদানের কাজে অনির্বান সরকার নামে রাজারহাট দেয়াড়ার বাসিন্দার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়। অনির্বাণের সাহায্যে এক ‘ক্লায়েন্ট’-কে ঋণ পাইয়ে দেয়। সেই কাজের কমিশনের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দুজনের মধ্যে বিবাদ। যার মীমাংসার কাজে রক্তিমের ভাতেন্ডার গ্যাস গোডাউনের কাছের দলীয় কার্যালয়ে বসে সালিশি সভা। গত শনিবার সন্ধ্যায় বসে বিচারসভা।অভিযোগ, সেই সালিশি সভায় ওই ব্যক্তিকে মারধর করে অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য রক্তিম কর-সহ তাঁর আরও চার সহযোগী। তাঁদের বিরুদ্ধে রাজারহাট থানায় এফআইআর দায়ের হয়। এই প্রসঙ্গে অভিযুক্ত রক্তিম জানিয়েছেন, “সালিশি সভায় চলাকালীন ওই ব্যক্তি মোবাইল বার করে ভিডিও করতে শুরু করেন। সেই কাজে নিষেধ করতেই বচসা বাঁধে। কোনও মারধরের ঘটনা হয়নি।”রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর কর বলেন, “আত্মীয় বলে অন্যায়ের প্রশ্রয় দেয় না দল। অন্যায় হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলব পুলিশকে।”পার্টি অফিসে ডেকে মারধরের অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধছে বিজেপি। দলের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, ‘‘সব জায়গাতেই তো হচ্ছে। পুলিশ, তৃণমূল সব মিলেমিশে একাকার ’’ অন্য দিকে, তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘পুলিশে যখন অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তখন পুলিশ যা করার করবে। পুলিশ নিজের মতো ব্যবস্থা নেবে।’’