নিজস্ব সংবাদদাতা,হিন্দুস্তান টিভি :- বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকার দাবি করছে যে সংখ্যালঘু এবং হিন্দুদের নিরাপত্তায় সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, তারপরেও বাস্তব চিত্র খুব একটা বদলায়নি।আর এবার দুর্গাপুজোর আগে উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা চাওয়ার অভিযোগ উঠল | একাধিক দুর্গাপুজো কমিটিকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, পুজো করতে গেলে পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হবে।ইতিমধ্যেই খুলনায় এক পুজো কমিটির কাছে এসে পৌঁছেছে এক উড়ো চিঠি। সেখানে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে, দুর্গাপুজো করতে গেলে দিতে হবে ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। গত ৭ সেপ্টেম্বরের তারিখ উল্লেখ থাকা ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে যে, দুর্গাপুজো করতে হলে প্রতিটি মন্দির কর্তৃপক্ষকেই “চাঁদা” হিসেবে দিতে হবে ৫ লক্ষ টাকা। অন্যথায় কেটে টুকরো টুকরো করে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।এদিকে, ওই চিঠিতে আরও জানানো হয় যে, ওই টাকা এক সপ্তাহের মধ্যেই দিতে হবে। কালিনগর বাজারে টাকা দেওয়ার স্থান পরবর্তী সময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়। এদিকে, এই বিষয়টি প্রশাসন থেকে শুরু করে সাংবাদিকদের জানানো হলে “কচুকাটা” করা হবে বলেও চিঠিতে লেখা রয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়েছে যে, “তোদের পরিবারও রেহাই পাবে না। প্রশাসন, সেনাবাহিনী সব আমাদের কেনা। চালাকি করে কোনও লাভ হবে না। টাকা কিন্তু দিতেই হবে। আল্লাহর কসম টাকা না পেলে কেটে টুকরো টুকরো করব। তোরা আমাদের নজরে আছিস।”
দুর্গাপুজা পালন করতে হলে প্রতিটি মন্দিরের পক্ষ থেকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে এ রকম উড়োচিঠি পেয়েছেন খুলনার দাকোপ উপজেলার বিভিন্ন মন্দিরের পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা। চিঠি পাওয়ার পর থেকে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ কাজ করছে। কোনও কোনও মন্দির পূজা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন উদযাপন কমিটির নেতারা। এই ঘটনায় উপজেলার ভিন্ন চারটি মন্দিরের পক্ষ থেকে দাকোপ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।দাকোপের একটি মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ডাকযোগে চিঠি পাওয়ার পর থেকে তাঁদের মধ্যে একধরনের উদ্বেগ কাজ করছে। বুধবার চিঠি পাওয়ার পর তাঁরা রাতে এলাকার মানুষকে নিয়ে সভা করেছিলেন। সেখানে বেশির ভাগ মানুষ পূজা না করার পক্ষে মত দেন। পরে সবাই মিলে পূজা করার সিদ্ধান্তেই অটল থাকেন। এখন থেকেই এলাকায় প্রতিদিন পাহারা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। তবে কিছু মন্দির কমিটি পূজা না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে। দাকোপের কামারখোলা সর্বজনীন দুর্গাপূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি শেখর চন্দ্র গোলদার বলেন, ‘এ বছর জাঁকজমকপূর্ণভাবে পূজা না করে খুব ছোট পরিসরে পূজা করার আলোচনা চলছিল। তবে এ ধরনের চিঠি পাওয়ার পর আমাদের সদস্যরা আর আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এ বছর আমাদের পূজাটা বন্ধ রাখতে হচ্ছে।’