প্রসেনজিৎ ধর,হুগলি:- শহর জুড়ে গজিয়ে উঠেছিল অবৈধ জলের ব্যবসা। কেউ মাটির তলা থেকে সরাসরি জল তুলে তা অন্যান্য নামি দামি কোম্পানির বোতলে ভরে বাজারজাত করছিলেন। আবার কেউ পুরসভার জলকে স্টোর করেই তাকে বোতলে ভরে বিক্রি করছিলেন। আচমকা হানা দিয়ে সেই কারবার ধরলেন কোন্নগরের পুরপ্রধান স্বপন দাস। অবৈধভাবে জল বিক্রি করছেন বেশ কিছু ব্যবসায়ী, এই খবর ছিল পুরসভার কাছে। শনিবার সকালে এই জল চুরি রুখতে কোন্নগর স্টেশন সংলগ্ন এলাকা আরএন টেগর রোডে পৌঁছে যান পুরপ্রধান স্বপন দাস। সেখানে গিয়ে অবৈধভাবে জল কারবারিদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন তিনি। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে এফ আই আর করা হবে বলে জানান। বেআইনি জলের সংযোগ নিয়ে সম্প্রতি একাধিকবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘জল চুরি’ রুখতে প্রশাসনের কর্তাদের মুখ্যমন্ত্রী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, পিএইচই–র সরবরাহ করা পরিস্রুত পানীয় জল রাজ্যের বহু বাড়িতে পৌঁছচ্ছে না।এই আবহেই শনিবার সকালে কোন্নগর স্টেশন সংলগ্ন আরএন টেগোর রোডে যান পুরপ্রধান। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, বেআইনি ভাবে জল নেওয়া হচ্ছে। দিলীপ দাস নামে এক ব্যক্তি পুরসভার পাইপ লাইন দিয়ে জল তুলে ট্যাঙ্কে স্টোর করেন। সেখান থেকে জল ফিল্টার করে পরে তা ব্যারেলে ভরে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। প্রতিদিন প্রায় ১০০ বোতল জল সরবরাহ করেন তিনি।চেয়ারম্যান জানান, শহরে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছানোর জন্য একাধিক পরিকল্পনা নিয়েছে পুরসভা। তারপরেও পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পাচ্ছেন না বাসিন্দারা। এটা জানতে পেরেই আচমকা অভিযান চালান চেয়ারম্যান। আর সেই অভিযানে গিয়েই চোখ কপালে ওঠে তাঁর। তিনি দেখেন অনেকেই বাড়িতে অবৈধভাবে বোরিং করে মাটির তলা থেকে জল তুলে নিচ্ছেন। তারপর সেই জল নামী কোম্পানির বোতলে ভরে বাড়ি বাড়ি বিক্রি করছেন। এ ব্যাপারে কোনও বৈধ কাগজপত্রই নেই তাঁদের কাছে। দিলীপ দাসের দাবি, তিন চার বছরের ব্যবসা তাঁর। তবে এটা যে বেআইনি সেটা তিনি জানতেন না। একইসঙ্গে তিনি বলেন ‘পেটের জ্বালায় কেউ চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিও তো করে। চারপাশে বহু অবৈধ কাজ হয়। কেউ সাট্টা খেলছে, মদ বিক্রি করছে। খালি আমরা জল তুললেই অবৈধ হয়ে গেলাম?’ তিনি জানান, শ্রীরামপুরের এক কেমিস্ট রয়েছেন, যিনি এই জল পরীক্ষা করে দেন।