নিজস্ব সংবাদদাতা :-কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন চার বছরের এক শিশুর মৃত্যু ঘিরে শনিবার চরম উত্তেজনা ছড়াল। মৃত শিশুর পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের গাফিলতির ফলেই এই মৃত্যু। ঘটনায় কল্যাণী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। হাসপাতাল চত্বর জুড়ে চলে উত্তপ্ত বিক্ষোভ, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ |হাসপাতালের একটি সূত্রে খবর, মঙ্গলবার মাথা যন্ত্রণা ও বমির উপসর্গ নিয়ে এক শিশুকে ভর্তি করানো হয় জেএনএম হাসপাতালে। শিশুর বাড়ি হরিণঘাটায়, বয়স চার বছর তিন মাস। পরিবারের দাবি, কর্তব্যরত চিকিৎসক পরিদর্শনে গিয়ে শিশুটির মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যানের পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই মতো বুধবার সিটি স্ক্যান করানো হয়। পরিবারের এক সদস্যের কথায়, ‘‘রেডিয়োলজিস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী চিকিৎসক বলেন, ‘শিশুর মাথায় জল জমেছে। এমআরআই করতে হবে।’ ওই চিকিৎসক এ-ও জানান, শিশুটির অবস্থা আগের থেকে ভাল। তবে আরও একটু সুস্থ হোক। তার পরে আবার এমআরআই স্ক্যান করানো হবে।’’ তিনি জানান, সেই মতো পরিবারের সদস্যেরা রেডিওলজি বিভাগে কথা বলতে যান। রিপোর্ট দেখে তাঁরাও একই কথা বলেন। কিন্তু, এ-ও জানান, শিশুর যা শারীরিক অবস্থা, তাতে এমআরআই স্ক্যান করানো যাবে না। অভিযোগ, তার পরেও শুক্রবার রাতে জুনিয়র চিকিৎসক এবং নার্সেরা সিটি স্ক্যানের জন্য পরিবারের সদস্যদের উপর চাপ সৃষ্টি করেন। এমনকি, রোগী পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। বলা হয়, পুনরায় সিটি স্ক্যান না-করলে হাসপাতাল থেকে রোগী বার করে দেওয়া হবে। মাঝরাতে চাপের মুখে পড়ে নতিস্বীকার করেন শিশুর পরিবারের সদস্যেরা। অভিযোগ, তাঁদের দিয়ে জোর করে লিখিয়ে নেওয়া হয় যে সিটি স্ক্যানের জন্য তাঁরা অনুমতি দিচ্ছেন। ঘটনাক্রমে সিটি স্ক্যানের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় শিশুটির। তার আগে তাঁকে সংজ্ঞাহীন করা হয়। কিন্তু তার পর থেকে আর তার জ্ঞান ফেরেনি বলে দাবি।পরিবারের দাবি, শুক্রবার রাতে জুনিয়র চিকিৎসক ও নার্সরা আচমকা পুনরায় সিটি স্ক্যানের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন তাদের ওপর। এমনকী, তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করা হয়। জানিয়ে দেওয়া হয়, স্ক্যান না করালে রোগীকে ছেড়ে দেওয়া হবে। সিনিয়র চিকিৎসকের কথা বললেও তাঁরা শোনেননি বলে দাবি। এরপর কার্যত চাপে পড়ে রাতেই প্রয়োজনীয় নথিতে সই করে দেয় পরিবার। অভিযোগ, শিশুকে অচেতন করে সিটি স্ক্যানের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর থেকেই জ্ঞান ফেরেনি তার। দীর্ঘক্ষণ অক্সিজেন ও স্যালাইন দেওয়ার পরও অবস্থার উন্নতি হয়নি| শনিবার সকালে চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন শিশুটি মারা গেছে। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতাল চত্বরে চলে বিক্ষোভ ও স্লোগান। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের পরিবার লিখিত অভিযোগ করেছে, তদন্ত শুরু হয়েছে।
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal