প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :-২১ জুলাই শহীদ দিবসের মঞ্চ থেকে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির, বিশেষ করে উত্তর প্রদেশ ও ওড়িশার ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন। ধর্মতলার জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে তিনি বিজেপির দুর্নীতি, বাঙালি সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচারের একটি বিস্তৃত খতিয়ান তুলে ধরেছেন।বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি এদিন বলেন, “এই একুশের মঞ্চ থেকে দিল্লিতে সরকার উৎখাত করার শিলান্যাস করলাম ৷” তাঁর কথায়, “২০২৬ শুধু বিধানসভা নির্বাচন নয়, এই ভোট দিল্লির দখলের প্রস্তুতি ৷”
ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে একুশের সমাবেশ মঞ্চ থেকে কেন্দ্র ও বিজেপিকে একের পর এক আক্রমণে বিদ্ধ করলেন তৃণমূল নেত্রী । তৃণমূলের লড়াইকে দিল্লি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, “আমি ছেড়ে দেওয়ার মেয়ে নই । সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম মনে আছে তো ? এবার দিল্লিও মনে রাখবে বাংলা !”গোটা দেশে বিজেপির সবচেয়ে বড় শক্তি হিন্দুত্ব এবং জাতীয়তাবাদ। মুখ্যমন্ত্রী এদিন এই দুই ইস্যুতেই গেরুয়া শিবিরকে বিঁধেছেন। প্রশ্ন তুলেছেন, অসমে কেন কালী মন্দির ভেঙে দেওয়া হয়? তুলে ধরলেন বাংলায় কীভাবে একের পর এক ধর্মীয় স্থান তৈরি হয়েছে। মমতার বক্তব্যে উঠে এল পুরীর জগন্নাথ ধাম। কালীঘাট, দক্ষিণেশ্বরের স্কাই ওয়াক, জল্পেশ মন্দিরের স্কাইওয়াকের মতো ধর্মীয় স্থানের সংস্কারের প্রসঙ্গ। মমতা ঘোষণা করলেন, এবার দুর্গা অঙ্গন তৈরি হবে। দিন কয়েক আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুর্গাপুরের সভায়, মা দুর্গা এবং মা কালীর নাম জপ করে গিয়েছেন। মমতা এদিন মোদির সেই ‘ব্যর্থ’ চেষ্টাকেও কটাক্ষ করে গেলেন। মঞ্চ থেকে মমতা বললেন, “টেলি প্রম্পটারে দুলাইন বাংলা লিখে এনে বলে দিলেই বাঙালি হওয়া যায় না।’ আসলে একই সঙ্গে ধর্ম এবং বাংলার আবেগ অস্ত্রে মোদিকে বিঁধে গেলেন মমতা। জাতীয়তাবাদ ইস্যুতে মমতার বক্তব্য, “অপারেশন সিঁদুরে পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখল করা গেল না কেন? আসলে প্রধানমন্ত্রী মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথায় চলছেন।”মমতার কথায়, “২০২৬-এর নির্বাচন শুধুমাত্র বিধানসভার নির্বাচন নয়, তা হবে দিল্লি দখলের প্রস্তুতি । বাংলার সম্মান, সংস্কৃতি ও ভাষার উপর আক্রমণের বিরুদ্ধে এবার লড়াই শুধু কলকাতার রাজপথে সীমাবদ্ধ থাকবে না, তা পৌঁছবে দেশের রাজধানীতেও । তাঁর অভিযোগ, বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশন একযোগে বাংলার নাগরিকদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত করছে । ভোটার তালিকা থেকে যদি একজনের নামও বাদ যায়, তাহলে নির্বাচন কমিশনের অফিস ঘেরাও করা হবে । এটা বাংলার মানুষ মেনে নেবে না ।”এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “ওরা বাংলাতে বদল আনার কথা বলছে ৷ বাংলায় পরিবর্তন আনতে গিয়ে ভারত সরকারকে বদল হতে হবে না তো ! আগামী দিনে দিল্লি থেকে সরকারকে উৎখাত করার শিলান্যাস করলাম এই একুশের মঞ্চে ৷ ২০২৬-এর ভোট শুধু ভোট নয়, ২০২৬ হবে দিল্লি কাঁপানোর লড়াই ।”
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal