প্রসেনজিৎ ধর, হুগলি :- করোনা সংক্রমণের জেরে এবারেও ৬২৫ বছরের মাহেশের ঐতিহাসিক রথযাত্রা স্থগিত হয়ে গেলো| এই নিয়ে পর পর দুবছর বন্ধ হয়ে গেল মাহেশের রথযাত্রা | এবছর আগামী ১২ জুলাই রথযাত্রা হবে, পুরীতে ভক্ত ছাড়া রথযাত্রা হলেও মাহেশে কিন্তু ধুমধাম সহকারে রথযাত্রা হচ্ছে না | বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান জগন্নাথ ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক পিয়াল অধিকারী | প্রতি বছর নিয়ম মেনে শুক্লাপক্ষের দ্বিতীয়াতে রথের রশিতে টান দেওয়া হয় | স্নানযাত্রার পর রথে চড়ে মাসির বাড়িতে যান জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা | তবে গত বছরের মতো এবারও মারণ ভাইরাস করোনার জেরে সমস্ত নিয়মে বদল | পিয়াল অধিকারী জানান করোনাকালে যাতে বিপুল জনসংখ্যা না হয় তার কথা মাথায় রেখেই মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিল| যদিও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি |
রথের দিন মন্দির চত্বরেই অস্থায়ী মাসির বাড়ি তৈরী করা হবে,জগন্নাথের প্রতিরুপে শিলাখন্ড যাবে মাসির বাড়ি| এছাড়াও আগামী ২৪ তারিখে জগন্নাথের স্নানযাত্রা হবার কথা,কিন্তু এবারেও আর মন্দির সংলগ্ন স্নান পিঁড়ির মাঠে নয়, মন্দিরের ভেতরেই হবে স্নান যাত্রা | ১৩৬ বছর আগে সেই যুগের কুড়ি হাজার টাকা ব্যয় শ্যামবাজারের বসু পরিবার এর সদস্য হুগলির দেওয়ান কৃষ্ণ চন্দ্র বসু এই লোহার রথটি তৈরি করে দেয় | এই রথ ৫০ ফুট উঁচু | রয়েছে ১২টি লোহার চাকা, ২টি তামার ঘোড়া | ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীনতম রথযাত্রা |এর আগে কাঠের রথ ছিল | বারবার ভেঙে যাওয়ার জন্যই এই লোহার রথ তৈরি হয় | ইতিহাস বলে সাধক ধ্রুবা নন্দ ব্রহ্মচারী স্বপ্নাদেশে গঙ্গা থেকে ভেসে আসা নিম কাঠ দিয়েই এই জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রা মূর্তি তৈরি করেন| বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রাধারানী উপন্যাসে এই মাহেশের রথের উল্লেখ আছে |