অভিষেক সাহা, মালদহ :- মালদহের কালিয়াচকে বাবা, মা, বোন এবং দিদাকে খুনের ঘটনা হার মানাবে সিনেমার চিত্রনাট্যকেও |মা-বাবা-সহ পরিবারের অন্যান্যদের খুনের পর দেহ গায়েব করতে কফিন বানিয়েছিল সে| দেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে |গ্রেফতারও করা হয়েছে অভিযুক্ত যুবক আসিফ মহম্মদকে | ঠিক কীভাবে পরিবারের চারজনকে খুন করল, তা নিজে মুখেই স্বীকার করেছে অভিযুক্ত আসিফ আহমেদ | পুলিশ সূত্রে খবর,গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে তিনটা নাগাদ ঠান্ডা পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বাবা, মা, দাদা, বোন এবং দিদাকে খাওয়ায় আসিফ | তারপরই তাঁদের মুখে সেলোটেপ লাগিয়ে দেন সে | বেঁধে দেওয়া হয় হাত-পা | এদিকে, হত্যাকাণ্ডের আগে থেকেই গুদামঘরে একটি চৌবাচ্চা তৈরি করেছিল আসিফ | গুদামঘরে যাতায়াতের জন্য তৈরি করে একটি সুড়ঙ্গ | ঘটনার দিন সুড়ঙ্গের মাধ্যমে গুদামঘরে একে একে পাঁচজনকে নিয়ে চৌবাচ্চায় ফেলে দেওয়া হয় প্রত্যেককে | তবে আসিফের দাদা আরিফের জ্ঞান ফিরে আসে | ভাইয়ের সঙ্গে কোনওক্রমে মারামারি করে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে কলকাতায় চলে যায় আরিফ | এদিকে, আসিফ ওই চৌবাচ্চার উপরে সিমেন্ট, বালি চাপা দিয়ে দেয় | একদিন আগে মালদহে ফিরে আসেন অভিযুক্তের দাদা | পুলিশকে ভাইয়ের ‘কীর্তি’ জানাতে কেন চার মাস সময় নিলেন আরিফ, সেই প্রশ্নও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের |
আসিফের বাড়িতে মোট ২৬টি সিসিটিভি ক্যামেরার হদিশ পেয়েছেন পুলিশকর্মীরা | কিন্তু এত সিসিটিভি ক্যামেরা কেন? প্রতিবেশীদের আসিফের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছিল অত্যাধুনিক অ্যাপ তৈরির জন্য এতগুলি সিসিটিভি লাগিয়েছিল সে | এছাড়াও বাড়ি থেকে কয়েক লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে |প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, সম্পত্তিগত বিবাদের জেরে খুন করা হয়েছে প্রত্যেককে | সেক্ষেত্রে মাত্র ১৯ বছর বয়সি আসিফের কেন এত টাকার প্রয়োজন হত, তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা| বাড়ির চারজন সদস্য – জাওয়াদ আলি(৫৩), তাঁর মা আলেক নুর বেওয়া(৭২), স্ত্রী ইরা বিবি(৩৬) এবং মেয়ে রিমা খাতুন(১৬) | চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকেই কার্যত নিখোঁজ হয়ে যান তাঁরা | প্রতিবেশীদের জানতে চাইলেই আসিফ এড়িয়ে যেতেন বলে অভিযোগ |এদিন ঘটনার খবর পেয়ে এদিন ঘটনাস্থলে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন| তিনি বলেন, ‘কি করে এ ধরনের ঘটনা ঘটলো তা বুঝতে পারছি না এই নিয়ে আমি প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেছি| তবে কি ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা আমরা পুলিশকে বলব কিন্তু সঠিক তদন্ত করতে |’