প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- রাজ্যে বিরোধী দলগুলি কর্মিসভা বা বৈঠক করতে চাইলেই বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী | শুভেন্দুর অভিযোগ ছিল, বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে আটকে দেওয়া হচ্ছে বিরোধীদের কর্মিসভা এবং বৈঠক | আগামী দিনেও এমন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা | এদিন হাইকোর্ট স্পষ্ট জানাল, আশঙ্কা অমূলক | আশঙ্কা প্রকাশের ক্ষেত্রে কোনও যথার্থ উপাদান বা ভিত্তি নেই | তবে রাজ্য সরকারকেও ১৪৪ ধারা সঠিকভাবে প্রয়োগের পরামর্শ দিল আদালত | বাংলার বিরোধী দলগুলি যখনই কলকাতায় বা জেলায় কোনও কর্মসূচী নিচ্ছে তখনই তা আটকে দিচ্ছে রাজ্য প্রশাসন, দেওয়া হচ্ছে না সভা, মিছিল, বিক্ষোভের অনুমতি | করতে দেওয়া হচ্ছে না ধর্না সমাবেশও। কোথাও কোনও ঘটনা ঘটলে আটকে দেওয়া হচ্ছে বিরোধী নেতাদের গাড়ি ও কনভয়। যখন তখন যেখানে সেখানে আটকে দেওয়া হচ্ছে বিরোধী দলের নেতাদের। কখনও কখনও গ্রেফতারও করা হচ্ছে | অথচ সেই একই ঘটনায় দেখা যাচ্ছে বহাল তবিয়তে সর্বত্র অবাধ বিচরণ করছেন রাজ্যের শাসক দলের নেতারা | তাঁদের জন্য কোনও বিধিনিষেধও কার্যকর হচ্ছে না | যাবতীয় নিয়ম আর অনুমতি না দেওয়ার ঘটনা শুধুমাত্র বিরোধী দলগুলির সঙ্গেই | এটা কী গণতন্ত্রের ছবি?এই প্রশ্ন তুলেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী | সঙ্গে ছিল আর্জি, আদালত গাইডলাইন তৈরি করে দিক যাতে বিরোধীরা নির্বিঘ্নে তাঁদের দলীয় সভা, মিছিল ও কর্মসূচি পালন করতে পারে | কিন্তু সেই আর্জিই শনিবার নাকচ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট | শুভেন্দুর দায়ের করা এই মামলা আগেই শুনানি শুরু হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে | সেই শুনানি চলছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে | সেই শুনানির কাজ আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল | কিন্তু রায়দান স্থগিত রেখেছিলেন বিচারপতি | শনিবার সেই রায় প্রদান করেছে আদালত | সেখানেই শুভেন্দুর গাইডলাইন তৈরির আর্জি খারিজ করে দিয়েছে আদালত | কারণ হিসাবে বলা হয়েছে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব সাংবিধানিক ভাবে রাজ্য সরকারের | সেখানে রাজ্য প্রশাসন যা বুঝবে তা করবে | রাজ্য প্রশাসন যদি মনে করে বিরোধী দলের সভা, মিছিল বা কর্মসূচির জেরে নির্দিষ্ট কোনও এলাকায় বা রাজ্যজুড়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে, তাহলে তাঁরা যে কোনওরকমের পদক্ষেপ নিতে পারে | এমনকি বিরোধী দলের সভা, মিছিল বা কর্মসূচির অনুমতি দিয়েও পরে তা বাতিল করতে পারে বা প্রত্যাহারও করতে পারে | তবে একই সঙ্গে রাজ্যকেও কলকাতা হাইকোর্টের থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়, যেন কেবল উপযুক্ত ক্ষেত্রেই ১৪৪ ধারা ব্যবহার করা হয় | শুভেন্দু অধিকারীর আবেদন প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এমন আশঙ্কা প্রকাশের ক্ষেত্রে যথার্থ উপাদান বা ভিত্তি নেই | তবে রাজ্যকেও ১৪৪ ধারা সঠিকভাবে প্রয়োগ করার পরামর্শ দিল কলকাতা হাইকোর্ট |