প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- শারীরিক পরীক্ষা করাতে জোকা ইএসআই হাসপাতালে গিয়ে কার্যত কান্নায় ভেঙে পড়লেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায় | শুক্রবার বেলা সওয়া ১২টা নাগাদ এই দৃশ্যের সাক্ষী রইলেন হাসপাতালে উপস্থিত সাংবাদিকরা | কোনওক্রমে টেনে গাড়ি থেকে নামিয়ে হুইল চেয়ারে বসান মহিলা সিআরপিএফ কর্মীরা | ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুহূর্তের জন্য উত্তেজনা ছড়ায় জোকা ইএসআই হাসপাতালে প্রবেশদ্বারের সামনে |এদিকে হাসপাতালে প্রবেশের সময় এই প্রথম নীরবতা ভেঙে পার্থ বললেন, “আমি ষড়যন্ত্রের শিকার |” আদালতের নির্দেশ মেনে প্রতি ৪৮ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে | সেই নির্দেশ মেনে বুধবারের পর শুক্রবার ২ জনকে সিজিও কমপ্লেক্স থেকে নিয়ে জোকা ইএসআই হাসপাতালে পৌঁছন ইডির আধিকারিকরা | দুজনকে নিয়ে ২টি গাড়ি বেলা সওয়া ১২টা নাগাদ পৌঁছয় সেখানে | এরপর প্রথমে গাড়ি থেকে বার করা হয় অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে | তারপর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় পার্থবাবুকে | ২ জনেরই শারীরিক পরীক্ষা চলছে| এদিন গাড়ি থেকে নামার সময় কার্যত ভেঙে পড়েন অর্পিতা | গাড়ির ভিতরেই কান্নায় বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল তাঁকে | এরপর ইডি আধিকারিকরা তাঁকে গাড়ি থেকে নামতে বললেও তা শুনছিলেন না তিনি | অবশেষে তাঁকে হাত ধরে টেনে গাড়ি থেকে নামান মহিলা সিআরপিএফ আধিকারিকরা | কিন্তু গাড়ির দরজার সামনেই মাটিতে বসে পড়েন তিনি | কোনওক্রমে তাঁকে পাঁজা কোলা করে তুলে হুইল চেয়ারে বসান হাসপাতালের কর্মীরা | এরপর হুইল চেয়ারে হাতলের ওপরে পা তুলে দেন তিনি | অঝোরে কাঁদতে দেখা যায় তাঁকে | তারপরই গাড়ি থেকে নামানো হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে | হুইল চেয়ারে করে তাঁকে হাসপাতালের ভিতরে নিয়ে যাওয়ার সময় এই প্রথম সাংবাদিকদের সামনে মুখ খোলেন তিনি | বলেন, “আমি ষড়যন্ত্রের শিকার|” গ্রেফতারির পর ৭ দিন পেরিয়েছে | এর আগেও একাধিকবার নিজের বক্তব্য পেশের সুযোগ ছিল পার্থবাবুর কাছে | কিন্তু একবারও মুখ খোলেননি তিনি | আত্মপক্ষ সমর্থনের চেষ্টাও করেননি | বরং নীরবই ছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছিল | তৃণমূলের তরফে বারবার বলা হয়েছিল, “পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজেই চুপ, উনি নিজেই কোনও প্রতিবাদ করছে না |” এসবের মাঝেই বৃহস্পতিবার রাজ্যের মন্ত্রিসভা ও তৃণমূলের সমস্ত পদ থেকে সরানো হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে | তার ঠিক পরেরদিনই মুখ খুললেন পার্থ |