প্রসেনজিৎ ধর :- চিটফান্ড কেলেঙ্কারি মামলায় গ্রেফতার তৃণমূল নেতা রাজু সাহানিকে ৫ দিন সিবিআই হেফজতের নির্দেশ দিল আসানসোলের আদালত। শুক্রবার হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানিকে তাকে তার নিউ টাউনের ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তার বাড়ি থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। শনিবার রাজুকে আসানসোলের আদালতে তোলা হয়। রাজুর গ্রেফতারি রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে হইচই ফেলতে পারে বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। এদিন আদালতে যাওয়ার আগে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য শোনা যায় রাজুর গলায়। তিনি বলেন, “সময় এলেই বুঝতে পারবেন”। এদিন সিবিআইয়ের গাড়িতে বসেই রাজু সাহানি বলেন, “আমি এসবের সঙ্গে যুক্ত নই। আপনারা খুব শিগগিরিই বুঝতে পারবেন সবটা।”এদিন হালিশহর পুরসভার গেটার সামনে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি নেতা-কর্মীরা। স্লোগান দিতে থাকেন, ‘চোর ধরো, জেলে ভরো’। সংবাদমাধ্যমের সামনে দাঁড়িয়ে এক বিজেপি নেত্রী বলেন, ‘আমরা এখানে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দেখাচ্ছি। গতকাল পুরসভার পুরপ্রধান রাজু সাহানির বাড়ি থেকে ৮৫ লক্ষ টাকা ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। তাঁকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধেই আমরা প্রতিবাদে নেমেছি। এগুলো সব চিটফান্ডের টাকা।’ এরপর তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছিলাম। পুলিশ আক্রমণ করে। পুলিশ মেরে হাতে চামড়া গুটিয়ে দিয়েছে। পুলিশ আমাদের প্রতিবাদ মিছিল আটকে দিয়েছে। আমাদের বেধড়ক ভাবে মারধর করা হয়।’ যুব মোর্চার আর এক কর্মী বলেন, ‘আমরা এখানে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছি। যুব মোর্চা দাবি রাখছে রাজু সাহানির পদত্যাগের। ওনাকে পদত্যাগ করতেই হবে। নয়ত আমাদের এই আন্দোলন চলবে। কিন্তু পুলিশ যেভাবে আমাদের উপর আক্রমণ করছে তার প্রতিবাদ আমাদের করতেই হবে। এর উত্তর আমরা দেব।’নিউ টাউনের ফ্ল্যাট ছাড়াও হালিশহরে তাঁর নিজের বাড়ি ও অন্য়ান্য জায়গা থেক বিপুল টাকার সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সিবিআইয়ের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে কোনও সহযোগিতা করেছেন না রাজু। ফলে তাঁকে গ্রেফতার করে হেফাজত নিতে হয়েছে রাজুকে। রাজুর আইনজীবী প্রশান্ত নাগ বলেন, সরকারি পদ ব্যবহার করে মুনাফা করার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তার রাজু সাহানির ক্ষেত্রে খাটে না। রাজু একজন ব্যবসায়ী। তার ৭-৮ টি কোম্পানি রয়েছে। তাই তার কাছে নগদ টাকা থাকা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। নিউটাউনের পাশাপাশি এ রাজ্য ও বেঙ্গালুরুতে মোট ৩টি ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছে সিবিআই। সিটিসেন্টার ২ এর সামনে একটি দোকান রয়েছে। নিউ টাউনের অ্যাকশন এরিয়া ২-এ ফ্ল্যাট রয়েছে রাজুর। সেখানে একটি আবাসনের বারোতলায় থাকেন রাজুর স্ত্রী ও সন্তান। জানা যাচ্ছে ওই আবাসনের এক একটি ফ্ল্যাটের দাম কোটি টাকার উপরে। এরকম একটি আবাসনের ৯ তলাতেও একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। ওই দুটি ফ্ল্যাটেই তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই। বারোতলার ফ্ল্যাট থেকে বেশ কিছু নথি উদ্ধার করেছে সিবিআই। এছাড়াও মোট ২০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।