দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :-
জামিন পেলেন কৌস্তভ বাগচি। ১ হাজার টাকার বন্ডে শর্তসাপেক্ষে জামিন পেলেন তিনি। ধৃত কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভকে ৮ দিনের পুলিশি হেফাজতে চেয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তাঁদের আর্জি শোনেনি আদালত।তাঁর জামিনের পক্ষে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য-সহ অন্য আইনজীবীরা। প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্যের অভিযোগে মাঝরাতে কংগ্রেস নেতাকে গ্রেপ্তার করেছিল বড়তলা থানার পুলিশ।শনিবার কৌস্তভের শুনানিকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শুনানিকক্ষ। আদালতের বাইরেও বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা। এদিন কৌস্তভের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘আমার মক্কেল কি সন্ত্রাসবাদী? পুলিশকে এত সাহস কে দিল? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে রাতে কারও বাড়িতে যেন না হানা দেওয়া হয়।’ তিনি বলেন, ‘দিন এমন আসছে, সরকারি কর্মচারী গ্রেফতার, নওশাদ গ্রেফতার, এবার আইনজীবী গ্রেফতার। যিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁর লেখা দেখুন। রাত ৩টের সময় কী করে পুলিশ যায়?’ কৌস্তভের বিরুদ্ধে যেসব ধারা দেওয়া হয়েছে, অধিকাংশই জামিনযোগ্য। এদিন বিচারক (অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১) অতনু মণ্ডলের এজলাসে কৌস্তভের মামলার শুনানি হয়। হুমকি এবং অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে শুক্রবার গভীর রাতে কৌস্তুভের ব্যারাকপুরের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। অভিযোগ, ‘বিনা কারণে’ বড়তলা থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে। কৌস্তুভের গ্রেফতারির পর কংগ্রেস এবং বাম আইনজীবীরা তাঁর পাশে দাঁড়ান। প্রদেশ কংগ্রেস এবং বামমহল কৌস্তুভের গ্রেফতারির কড়া নিন্দা করে। তাঁরা জানায়, এই ঘটনা নিয়ে তাঁরা জাতীয় স্তরে আন্দোলন করবেন। পুলিশের বক্তব্য, কৌস্তুভকে হুমকি এবং অশান্তি ছড়ানোর দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার গ্রেফতারের সময় কোন ধারায় তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, তা নিয়েও পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় কৌস্তভের।
সকালের দিকে পুলিশের নতুন বাহিনী যায় তাঁর বাড়িতে। পরে সেখানেই গ্রেফতার করা হয় এই আইনজীবী নেতাকে। গ্রেফতারির পর কৌস্তুভ বলেন, ‘‘বিনা কারণে আমায় হয়রানি করা হচ্ছে। এখানে আইনের শাসন নয়, শাসনের আইন চলছে। আমায় গ্রেফতার করায় আমার জয় হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়ে গিয়েছেন!’’বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেসের জয়ের পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন অধীরের কন্যার আত্মহত্যা এবং তাঁর গাড়িচালকের মৃত্যু নিয়ে তিনি ‘অনেক কথা’ জানেন। তিনি ‘মুখ খুললে’ বিপদ হবে! তার জেরেই শুক্রবার পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করেন কৌস্তভ। সেখানে তিনি তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন আমলা দীপক ঘোষের একটি বইয়ের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘ব্যক্তি আক্রমণ’ করেন বলে অভিযোগ। শনিবার কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় জানান, সেই কারণেই কলকাতা পুলিশ কৌস্তুভকে গ্রেফতার করেছে |