প্রসেনজিৎ ধর :-হুগলির রিষড়ায় রামনবমীর মিছিল ঘিরে অশান্তির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার সকাল থেকেই থমথমে এলাকা। দোকানপাট বন্ধ। রাস্তাঘাটে লোকজনের জমায়েত নেই। কিছু যানবাহন চলছে। সব মিলিয়ে সুনসান এলাকা। জি টি রোডের মাহেশ, কোন্নগর সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় চলছে নাকা চেকিং। প্রতিটি গাড়ি, বাইক এবং অন্যান্য যানবাহনকে তল্লাশির পর যেতে দেওয়া হচ্ছে রিষড়ার দিকে। মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।রবিবার রাত থেকেই বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত তা বন্ধই থাকবে। রিষড়া শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। রবিবার রিষড়ায় বিজেপি সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের মিছিলে আচমকা হামলার ঘটনা ঘটে। ইটবৃষ্টি, কাচের বোতল ছোঁড়ায় আক্রান্ত হন পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ। তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে হামলাকারী কারা, তা এখনও অজানা। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালে বসেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে চিঠি লিখলেন আক্রান্ত বিধায়ক বিমান ঘোষ।
দাবি করলেন, রাজ্যের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। তা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হোক |সোমবার শাহ ও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে লেখা চিঠিতে বিমানবাবু লিখেছেন, ‘রবিবার ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে যাওয়ার সময় রাম নবমীর মিছিলে ইচ্ছাকৃত ও পরিকল্পিত হামলা চালানো হয়। পাথর বৃষ্টির পাশাপাশি তলোয়ার ও বোমা নিয়ে হামলা হয়েছে। পুলিশ ছিল দর্শকের ভূমিকায়। গতকালের ঘটনায় যারা আক্রান্ত পুলিশ তাদেরই নিগ্রহ ও গ্রেফতার করছে’।
রবিবারের ঘটনার পরপরই টুইটে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতারা। সুকান্ত মজুমদার থেকে শুভেন্দু অধিকারী, অমিত মালব্যরা একের পর এক টুইটে বিদ্ধ করেছেন রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশকে। খবর পেয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। দুষ্কৃতীদের কড়া শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। পরে তিনি রাজ্য বিজেপি এবং মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিবদের সঙ্গে কথা বলে সকলের মতামত জানতে চান।রামনবমীর মিছিল ঘিরে রবিবার রাতে অশান্ত হয় রিষড়া | বিভিন্ন এলাকা থেকে এক জায়গায় জড়ো হওয়ার পর মিছিল মাহেশের রথের সামনে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল। স্থানীয় সূত্রের খবর, কিছুটা যাওয়ার পর উল্টোদিক থেকে মিছিলের উপর ইটবৃষ্টি শুরু হয় বলে অভিযোগ। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ মিছিলে ছিলেন। ইট পড়ার পরেই দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি চলে। একাধিক দোকান, বাড়িতে ভাংচুর চালানো হয়।চলে অগ্নিসংযোগ। পুলিশ লাঠি এবং টিয়ার গ্যাস চালায়। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে হুগলি জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা অকুস্থলে পৌঁছে যান। বিভিন্ন জায়গায় বসে পুলিশ পিকেট। সোমবার সকালেও চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারা টহলদারি চালান এলাকায়।