প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- খারিজ হয়ে গেল বিরোধী দলনেতার তত্ত্ব। যা পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জোর ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। নন্দীগ্রামে বুথ সংগঠনে চরম ব্যর্থতা। আর সেটা নিয়ে দলীয় বৈঠকে নাম না করে তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আঙুল তুললেন শুভেন্দু অধিকারীর দিকে। এমনকী নন্দীগ্রামে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রার্থী ঘোষণা করা শুভেন্দুর স্বেচ্ছাচারিতা বলেও অভিযোগ তুলেছেন ওই জেলা সভাপতি। এখানেই শুভেন্দুর মহাজোটের তত্ত্বকে খারিজ করে দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার সল্টলেকে ইজেডসিসি ভবনে পঞ্চায়েত ও বুথ নিয়ে বঙ্গ–বিজেপির বৈঠক ছিল। সেখানেই শুভেন্দু বিরোধিতায় সরগরম হয়ে উঠল।‘নো ভোট টু মমতা’ স্লোগানকে সামনে রেখে তৃণমূল বিরোধী ভোটকে এক জায়গায় অনার যে-বার্তা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দিয়েছিলেন, তার পাল্টা তত্ত্ব উঠে এল রাজ্য বিজেপির পঞ্চায়েত বিষয়ক বিশেষ সাংগঠনিক সভা থেকে। বিধাননগরে পূর্বাঞ্চলীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রেক্ষাগৃহে বৃহস্পতিবার দলের সভায় শুভেন্দু কিংবা দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ উপস্থিত না থাকলেও ছিলেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল, সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয়, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল, দীপক বর্মণ, পঞ্চায়েত নির্বাচন বিষয়ক প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক দেবশ্রী চৌধুরী প্রমুখ।শুভেন্দু এর আগে একাধিক বার বলেছিলেন, “কে কোথায় জিতবে সেটা পরের বিষয়, আগে তৃণমূলকে হারাতে হবে।”
এমনকি সুকান্ত বলেছিলেন, “আমরা চেষ্টা করব সব বুথে প্রার্থী দিতে, যেখানে প্রার্থী দেব না, কৌশলগত কারণেই দেব না।” রাজনৈতিক মহলের মতে, সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ বিজেপির রক্ষণশীল অংশের প্রতিনিধি দেবশ্রীর এ দিনের বক্তব্য কার্যত শুভেন্দুর অলিখিত ‘জোট তত্ত্ব’কে খারিজ করে দিল।অন্যদিকে শুভেন্দুর তত্ত্বকে সরাসরি খারিজ করে দিয়ে দেবশ্রী জানান, নিচুতলায় কোনও মহাজোট হবে না। বিজেপি তার নিজস্ব পতাকা–চিহ্ন নিয়েই লড়বে। একক লড়বে। বাম–কংগ্রেসের কোনও বিধায়ক নেই। তাই রাজ্যে একমাত্র বিরোধী দল বিজেপি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে একের বিরুদ্ধে এক পরিস্থিতিতে লড়তে হলে বিজেপি তাঁকে প্রতীক দেবে। সুতরাং সেই নেতাকে বিজেপির প্রতীকেই লড়তে হবে। অন্য কোনও প্রতীকে লড়াই বিজেপি সমর্থন করবে না। এমনটাই বলেছেন বলে সূত্রের খবর। তবে ময়নার বিধায়ককে সরাসরি আক্রমণ করেন তমলুকের জেলা সভাপতি। তমলুকের জেলা সভাপতি বৈঠকে বলেন, ময়নার বিধায়ক তো ক্রিকেট খেলা নিয়েই ব্যস্ত থাকেন।বৈঠকে বিরোধী পরিসরে বিজেপির প্রভাব কমছে বলেও মন্তব্য করেছেন কয়েক জন। সূত্রের দাবি, শুভেন্দু ‘ঘনিষ্ঠ’ এক বিধায়ক দলের সাংগঠনিক কাজকর্মের তীব্র সমালোচনা করে জানান, এই ধরনের কাগুজে কর্মসূচির কোনও মূল্য রাজনীতিতে নেই।