দেবরীনা মণ্ডল সাহা :-উপনির্বাচনে জেতার ৩ মাসের মধ্যেই কংগ্রেসে ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন সেখানকার কংগ্রেস বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস। একসময় অধীর চৌধুরী তাঁর সম্পর্কে বলেছিলেন তিনি বাইরন নয় আয়রন। কংগ্রেস ছেড়ে সেই বাইরনের মন্তব্য শুনলে চমকে যাবেন অধীরও চৌধুরীও। বাইরনের দাবি, সাগরদিঘি জয়ে কংগ্রেসের কোনও অবদান ছিল না।সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাইরন বলেন, ‘আমি জয়ী হয়েছি, এর পিছনে কংগ্রেসের কোনও অবদান ছিল না। আমি কংগ্রেসের ভোটের জিতিনি। ব্যক্তিগতভাবে জনগণ আমাকে ভোট দিয়েছে। কংগ্রেসে থেকে কোনও কাজ করা যাচ্ছিল না। বিজেপিকে রুখতে হলে একমাত্র দল তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেস থেকে এখনও অবধি কোনও কিছু করে উঠতে পারিনি।’
অধীর চৌধুরীর উদ্দেশেও কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেই বাইরন। তিনি বলেন, ‘অধীর চৌধুরী বিজেপির বিরুদ্ধে কোনও কথা বলছেন না। উনি সবসময় তৃণমূলের বিরুদ্ধে কথা বলেন। উনি সিনিয়র নেতা, আমি বারবার বলার চেষ্টা করেও কোনও লাভ হয়নি। আমি ভাবতাম কেন উনি বিজেপিকে কিছু বলছেন না। সেই কারণে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’তৃণমূলে যোগদানের কারণ ব্যক্ত করেছেন বাইরন। তিনি বলেন, ‘কংগ্রেসে থেকে কোনও কাজ করতে পারছিলাম না। এলাকার উন্নয়ন করতে না পারলে বিধায়ক থেকে করবটা কী! সেই কারণে ভেবেচিন্তে তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। আমি জনগণের ভোটে জয়ী হয়েছে, মানুষকে সবটা দিতে চাই। আমি প্রথম থেকে তৃণমূলের টিকিট নিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কোনও কারণে পাইনি।’সাগরদিঘির বিধায়ক বলেন, ‘আমি রাজনীতি ভালোভাবে বুঝতাম না। এখন যত দিন যাচ্ছে, সেটা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছি। শাসকদল ছাড়া মানুষের উন্নয়ন করা যাবে না। দল যদি আমাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেয়, তবে আমি পদত্যাগ করে আবার জিতে দেখিয়ে দেব।’ যদিও অতীতে একাধিকবার তৃণমূলের যোগদানের সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেন বাইরন। এদিকে, বাইরনের দলত্যাগ নিয়ে রাজ্য কংগ্রেস প্রধান অধীর চৌধুরী বলেন,’ বাইরনের তৃণমূলে যোগদানে কংগ্রেসের উপরে প্রভাব পড়বে না। আরও জিদ বাড়ল কংগ্রেসের। বাংলার মানুষের কাছে তৃণমূল আরও নগ্ন হল। যা কিছু ত্রুটি ভুল তা শুধরে নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব। আগামী দিনে আরও ভালো মানুষকে সাগরদিঘিতে টিকিট দেব। ওকে টিকিটে দেওয়া নিয়ে দলের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। এনিয়ে তাঁরা সম্মতি দিয়েছিলেন। জানতাম ও নন পলিটিক্যাল। কংগ্রেসের সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে তিনি কোনও দিনই জড়িত ছিলেন না। তার সম্পর্কে আমরা ধারণা ভালোই ছিল। একটি জিনিস বুঝেছিলাম ছেলেটি একটি দুর্বল প্রকৃতির। শারীরিকভাবে কিছুটা অক্ষম। সুগারের পেশেন্ট। মিটিং মিছিল করতে পারছে না। ভোটের প্রচার ঠিকঠাক করতে পারছে না। আমি সেগুলো ম্যানেজ করেছিলাম। তবে একটা জিনিস প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। দিদিভাইকে বলতে চাই, দিদিভাই আমরা এটা প্রমাণ করে দিয়েছি তৃণমূল কংগ্রেসকে হারানো যায়।’