দেবরীনা মণ্ডল সাহা :- ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা ঘিরে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। যদিও সেই সব প্রশ্ন এখন সুকৌশলে এড়িয়ে যাচ্ছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব । কার্যত দুর্ঘটনার কোনও দায়ই নিতে চাইছেন না রেলমন্ত্রী। গোটা বিষয়টি তিনি এখন তদন্ত সাপেক্ষ বলে এড়িয়ে যাচ্ছেন। খুব সহজে যে সেই সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে তাও বলা যাচ্ছে না। প্রথম প্রশ্ন ১৩ মিনিটের ব্যবধান কীভাবে কমে গেল? দ্বিতীয় প্রশ্ন, কবচ কেন কাজ দিল না? তৃতীয় প্রশ্ন রেক কেন যাত্রীদের জীবন বাঁচাতে পারল না? এদিন ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ফরেন্সিক টিম। তাঁরা তদন্তের কাজ শুরু করেছেন। তবে প্রথম তিনটি প্রশ্নের উত্তর তাঁদের কাছেও নেই এই মুহুর্তে।এত কিছুর মাঝে একটা প্রশ্ন বারবার ঘুরে আসছে, তা হল এই রকম বীভৎস দুর্ঘটনা ঘটল কীভাবে? সিগন্যালিংয়ের সমস্যা নাকি সঠিক সময়ে ব্রেক কষতে না পারা, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন বহু। ইতিমধ্যেই রেল মন্ত্রকের তরফে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তদন্ত শেষ হলেই দুর্ঘটনার কারণ জানা যাবে, এমনটাই জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বীনী বৈষ্ণব। তবে ভারতীয় রেল সূত্রেই জানা গিয়েছে, যে ট্রাকে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে ছিল না কবচ সিস্টেম ।ভারতীয় রেলওয়ের মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা এ দিন সকালেই বলেন, “উদ্ধারকাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। এবার আমরা রেললাইন মেরামতির কাজ করছি।
এই রুটে কবচ ব্যবস্থা ছিল না”। গতকাল উদ্ধারকাজে সামিল হওয়া রেলের আধিকারিকরাও জানিয়েছিলেন, অ্যান্টি-কলিশন সিস্টেম, কবচ ব্যবস্থা ছিল না ডাউন যশবন্তপুর এক্সপ্রেস বা আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেসে। ফলে দুর্ঘটনা এড়ানোর কোনও সুযোগই ছিল না। কারণ একটি ট্রেনে কবচ সিস্টেম থাকলে, তা ব্রেক কষতে পারবে না। দুটি ট্রেনেই কবচ সিস্টেম থাকলে তবেই একমাত্র কাজ করবে কবচ ব্যবস্থা।ট্রেন দুর্ঘটনা রুখতেই ভারতীয় রেলওয়ের তরফে আনা হয়েছিল কবচ ব্যবস্থা। গত বছর থেকে এই প্রযুক্তি কার্যকর করা হয়েছে বিভিন্ন ট্রেনে। রিসার্চ ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশনের উদ্যোগে তৈরি এই কবচ সিস্টেম দুটি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ রুখতে সক্ষম। চালকের ভুল বা অন্য কোনও প্রযুক্তিগত বা যান্ত্রিক সমস্য়ার কারণে যদি দুটি ট্রেন মুখোমুখি চলে আসে, তবে আপনাআপনিই ব্রেক কষবে কবচ সিস্টেম। ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কম দৃশ্য়মানতা থাকলেও, ট্রেন চলাচলে বিশেষ সাহায্য করবে এই সিস্টেম। গত বছর রেলমন্ত্রী অশ্বীনী বৈষ্ণব নিজেই পরীক্ষা করে দেখেছিলেন এই কবচ সিস্টেম। বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের ১৫০০-রও বেশি ট্রেনে রয়েছে কবচ ব্যবস্থা, কিন্তু গতকাল দুর্ঘটনাগ্রস্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ছিল না এই কবচ ব্যবস্থা।
Hindustan TV Bangla Bengali News Portal