দেবরীনা মণ্ডল সাহা :- সোমবার বিধানসভায় নওশাদ-শওকতকে দেখা গেল পরস্পরের পাশাপাশি, মুখে শান্তির বাণী নিয়ে।আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ বিধানসভায় এসেছিলেন কমিটির বৈঠকে যোগদান করতে। বৈঠকে যোগদানের আগে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। সেই সময় বিধানসভায় আসেন শওকতও, বৈঠক থাকায় গাড়ি বারান্দায় নেমেই চলে যাচ্ছিলেন বৈঠক করতে। কিন্তু বিধানসভার মূল দরজায় তখন দাঁড়িয়ে নওশাদ। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাই শওকতকে অনুরোধ করেন নওশাদের পাশে দাঁড়াতে। এরপর পাশাপাশি দাঁড়িয়েই একে অপরকে দাদা ও ভাই সম্বোধন করেন তাঁরা |তৃণমূল-আইএসএফ দ্বন্দ্বে পুড়েছে ভাঙড়। গুলি-বোমায় ত্রস্ত হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়, ক্যানিং। ঝরেছে রক্ত। প্রাণ গিয়েছে তরতাজার ৩ জনের। গোটা ঘটনায় অভিযোগ, পালটা অভিযোগে বিদ্ধ হয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি এবং তৃণমূলের শওকত মোল্লা-আরাবুল ইসলামেরা। আর তাঁরাই আজ ‘ভাই-ভাই’।
সোমবার বিধানসভায় অন্তত সেই ছবিই ধরা পড়েছে। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে নওশাদ ও শওকত। ঘোরতর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ শওকত মোল্লাকে ‘বড় ভাই’ বলে পরিচয় দিলেন নওশাদ। আবার আইএসএফ বিধায়ককে ‘ছোট ভাই’ বলে মেনে নিলেন শওকতও।নওশাদ বললেন, ‘‘শওকতদা আমার দাদার মতো, তাঁকে পাশে নিয়েই আমি শান্তি ফেরাতে চাই।’’ উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেই ভাঙড়ে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে নবান্ন পৌঁছে গিয়েছিলেন আইএসএফ বিধায়ক। কিন্তু দেখা হয়নি।অপরদিকে, নওশাদকে পাশে নিয়ে তৃণমূল নেতা শওকত বলেন, ‘‘আমরা সবসময় শান্তির পক্ষে। শান্তিস্থাপনের পক্ষেই আমরা কাজ করে যাব। ওরা (নওশাদ) যদি ভাঙড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চায় তা হলে আমরা সবসময় রাজি।’’ বাংলার রাজনীতি কারবারিদের একাংশের মতে, বিধানসভায় মুখোমুখি হয়ে যাওয়াতেই দুই নেতা সৌজন্যবশত এমন কথা বলেছেন। কিন্তু ভাঙড়ের রাজনীতি সম্পর্কে যাঁরা ওয়াকিবহাল, তাঁরা জানেন মুখের কথা শান্তি ফিরবে না। তাই বিধানসভায় শাসক-বিরোধী সৌজন্য দেখা গেলেও, বাস্তবের মাটিতে তার কতটা প্রতিফলন দেখা দেবে তা নিয়ে সন্দিহান রাজনৈতিক মহলের একাংশ।