প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সংগঠনে বড়সড় রদবদল। বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হল দিলীপ ঘোষকে। যদিও এই পদ খোয়ানোর পর দিলীপ ঘোষের নতুন কোনও পদপ্রাপ্তি হয়েছে কি না, সেই বিষয়টি এখনও জানা যায়নি। দিলীপ ঘোষের হাত ধরেই বঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি হতে শুরু করেছিল। বিজেপির রাজ্য সভাপতি হিসেবে একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে নিজের জাত চিনিয়েছেন তিনি। তারপর দিলীপ ঘোষকে বাংলার রাজনীতিতে থেকে তাঁকে উত্তরণ ঘটে জাতীয় রাজনীতিতে। বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় দিলীপকে। ২০২১ সাল থেকে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি পদে ছিলেন খড়্গপুরের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। এবার কেন্দ্রীয় সংগঠনের রদবদলে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি পদ থেকে বাদ গিয়েছেন তিনি। দিলীপ মন্ত্রিত্ব হারানোর পরই রীতিমতো বিস্ফোরক টুইট করেছেন বাবুল সুপ্রিয় । প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ তথা অধুনা বাংলার মন্ত্রী বলছেন,”সর্বভারতীয় বিজেপি আসলে বাঙালিদের ঘৃণা করে। বাঙালিরা এই গদ্দার পার্টির কাছে মূল্যহীন। এখন শুধুমাত্র একটা জোকার বাংলায় বিজেপির প্রতিনিধিত্ব করেন। সেটা যে কে আশা করি সবাই আন্দাজ করতে পারবেন।” দিলীপকে নিশানা করে বাবুল বলছেন,”বাংলা বিজেপির মুখ বন্ধ করে দেওয়া হল। এবার উনি নিজের ওষুধের স্বাদ বুঝবেন। এত বছর দল করার পর ঝুনঝুনি পেলেন। এবার উনি নিশ্চয়ই বুঝবেন, জেতা সাংসদ আসন মুখের উপর কেন ছুঁড়ে দিয়ে এসেছিলাম।”বাবুল একা নন, তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতিকে কটাক্ষের তিরে বিঁধেছেন। তাঁর বক্তব্য,” দিলীপ ঘোষের নাম সহ-সভাপতি পদ থেকে সরে গেল। অনেকে বলেছেন ললিপপের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার পদ কয়েক মাসের জন্য শান্ত্বনা পুরষ্কার পেতে পারেন। এরা মিউজিক্যাল চেয়ারে থাকেন। বেশি অপমানিত হলে, দুয়ারে সরকারে আসার কথা ভেবে দেখতে পারেন দিলীপ ঘোষ। তার বাড়ির লোকেদের মতো। যারা যারা নানা সমস্যায় থাকে, তাদের জন্য সরকারের নানা স্কিম থাকে। আগেও উত্তর দিনাজপুরের এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বাদ দিয়েছিল। আমরা বলছি জীবনের সমস্যা থাকলে, দুয়ারে সরকারের স্কিম ভেবে দেখতে পারেন।”কেন দিলীপকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল, তা নিয়ে বিজেপির অন্দরে জল্পনা আছে। তার মধ্যে সবচেয়ে জোরালো হল— সুকান্ত মজুমদার এবং শুভেন্দু অধিকারীকে ‘স্বস্তি’ দিতেই দিলীপকে সংগঠনের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য বিজেপির একাংশের বক্তব্য, সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হওয়ার সুবাদে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে নাকি দিলীপ বার বারই বলেছেন, রাজ্যে সে ভাবে কোনও কোনও আন্দোলন দলীয় স্তরে দানা বাঁধছে না। সংগঠন বৃদ্ধি পাচ্ছে না। এক কথায়— রাজ্যে ‘যোগ্য’ নেতৃত্বের অভাব রয়েছে। যদিও এ সবই ‘অসমর্থিত’ সূত্রের দাবি। এমনিতে দিলীপের সঙ্গে দলের ভিতরে অনেকের লড়াই থাকলেও তবে বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্তের সঙ্গে তাঁর কোনও মতবিরোধ নেই বলেই অনেকের বক্তব্য।