দেবরীনা মণ্ডল সাহা,কলকাতা :-
এমএলএ হোস্টেলের বাইরে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ। আর সেই বিক্ষোভ হঠাতে এক চাকরিপ্রার্থীর গলা টিপে ধরার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। পোস্টারে লেখা ‘‘চিতার আগুন লাগছে গায়ে, আর কত দিন পড়বো পায়ে?’’। আবার কারও হাতের পোস্টারে দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই’’। এমনই সারি সারি পোস্টার এবং অজস্র দাবি দাওয়া লেখা পোস্টার হাতে নিয়ে এমএলএ হস্টেলের গেটের সামনে বসে ছিলেন স্কুলের চাকরিপ্রার্থীরা। আর ভিতরে আটকে ছিলেন বহু মন্ত্রী এবং বিধায়ক। রাজ্যের বিধানসভা অধিবেশনের যোগ দেওয়ার কথা তাঁদের। অথচ চাকরিপ্রার্থীদের সরিয়ে এমএলএ হস্টেলের গেট দিয়ে বেরনোর উপায় নেই। এ ভাবেই দীর্ঘ ক্ষণ এমএলএ হস্টেলের ভিতরেই আটকে রইলেন তাঁরা।বুধবারের সকাল থেকেই কিড স্ট্রিটে এমএলএ হস্টেলের সামনে শুরু হয় ওই বিক্ষোভ। তবে বেলা ১১টা নাগাদ বিক্ষোভকারীদের একরকম জোর করেই এমএলএ হস্টেলের গেটের সামনে থেকে তুলে দেয় পুলিশ।বুধবার সকালে এমএলএ হস্টেলের বাইরে ধর্নায় বসেন এসএলএসটি-র ২০১৬’র পদপ্রার্থীরা। পুলিশ সেখানে পৌঁছতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কিড স্ট্রিট চত্বর। প্রথমে মাইকিং করে চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না থেকে উঠে যেতে বলেন পুলিশ আধিকারিকরা।কিন্তু নিজেদের দাবিতে অনড় থাকেন তাঁরা। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর শুরু হয় বলপ্রয়োগ। টেনে হিঁচড়ে চাকরিপ্রার্থীদের তোলার চেষ্টা করে পুলিশ। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। রীতিমতো চ্যাঙদোলা করে তাঁদের গাড়িতে তোলার চেষ্টা চলতে থাকে। পাল্টা প্রতিরোধে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রাস্তায় শুয়ে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা।
যদিও ততক্ষণে আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভের জের পড়েছে বিধানসভার অধিবেশনেও। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, ‘‘এমএলএ হস্টেলের সামনে বিক্ষোভ হচ্ছে, সেই জন্য এমএলএ, মন্ত্রীরা আটকে পড়েছেন। বলার অধিকার সবারই আছে। কিন্তু, এভাবে স্তব্ধ করে দিয়ে আন্দোলন করা ঠিক নয়। আমি প্রশাসনকে বলেছি বিষয়টা দেখতে।’’চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, বিধানসভার অধিবেশনে নানা বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। অথচ যে চাকরিপ্রার্থীরা প্রায় ৯০০ দিন ধরে ‘প্রাপ্য’ চাকরির দাবিতে পথে বসে আন্দোলন করছেন, তাঁদের নিয়ে কোনও আলোচনা নেই। এই অভিযোগে বিধায়কদের থাকার জায়গা, এমএলএ হস্টেলের গেট আটকে বিক্ষোভ দেখালেন রাজ্যের স্কুলের এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রায় আড়াই বছর ধরে তাঁদের আন্দোলন চলাকালীন, অন্তত চারটি বিধানসভার অধিবেশন হয়েছে। কিন্তু কোনও অধিবেশনেই তাঁদের নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। তাঁদের প্রশ্ন, সরকার পক্ষ বা বিরোধী পক্ষের বিধায়কেরা কেন তাঁদের নিয়ে কোনও আলোচনা করছেন না।