প্রসেনজিৎ ধর, কলকাতা :- বেশ কিছুটা সেরে উঠেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার সকালে জারি করা মেডিক্যাল বুলেটিন বলছে, এখন স্থিতিশীল রয়েছেন তিনি। আগামী শনিবার আবার বুদ্ধদেবের শারীরিক অবস্থা নিয়ে পর্যালোচনা করতে বসতে পারে মেডিক্যাল বোর্ডের বৈঠক। সেখানেই আগামী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হবে।দিনে দিনে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, আল্ট্রা সাউন্ড করা হবে বুদ্ধবাবুর। ফুসফুসে জল জমেছে কিনা, তা দেখার জন্য এই পরীক্ষা। শনিবার বুদ্ধবাবুকে কবে ছাড়া সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে মেডিক্যাল বোর্ড।আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বুদ্ধদেব চিকিৎসক এবং যাঁরা তাঁকে হাসপাতালে দেখতে আসছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন। জানাতে পারছেন নিজের সুবিধা, অসুবিধার কথা। বুধবারই তিনি চিকিৎসকদের কাছে আম খেতে চেয়েছিলেন। জানা গিয়েছে, তাঁর জিভে আমের স্বাদ দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। যদিও রাইলস টিউবের মাধ্যমেই এখনও খাওয়াদাওয়া করাতে হচ্ছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। তাঁর ‘সোয়ালো অ্যাসেসমেন্ট’-ও যথারীতি চলবে।বুধবার রাতে আচমকাই বুকে অস্বস্তি অনুভব করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গে ইসিজি করানো হয়। সেই রিপোর্টে চিন্তার কিছু খুঁজে পাননি চিকিৎসকেরা। পরে করানো হয় এক্সরে। সেই রিপোর্টের একটি অংশ অস্পষ্ট। তাই চিকিৎসকরা নিশ্চিত হতে বৃহস্পতিবার তাঁর আল্ট্রা সোনোগ্রাফি করানো হবে। তাতে ধরা পড়়বে বুদ্ধদেবের বুকে জল জমেছে কি না। যদি দেখা যায়, জল জমেছে, তখনই তা বার করে দেওয়া হবে। আর যদি দেখা যায় জলের পরিমাণ সামান্য, তাহলে তা ওই অবস্থাতেই রেখে দেওয়া হবে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, নিউমোনিয়ার কারণেও অনেক সময় বুকে জল জমে। কিন্তু নিউমোনিয়া কমে গেলে জলও থাকে না। বুদ্ধদেব নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। এ ছা়ড়াও রয়েছে সংক্রমণ। যদিও সংক্রমণের পরিমাণ আগের তুলনায় কমেছে। কিন্তু এখনও বুদ্ধদেব পুরোপুরি সংক্রমণমুক্ত নন। তাই স্যালাইনের মাধ্যমে তাঁকে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে যাওয়া হবে। প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে, আগামী শনিবার, অর্থাৎ এক সপ্তাহের ডোজে দেওয়া হবে অ্যান্টিবায়োটিক।সূত্র মারফত খবর, বৃহস্পতিবার দ্বিতীয়ার্ধে বুদ্ধদেবকে দেখতে আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে আসতে পারেন পালমোনোলজিস্ট ধীমান গঙ্গোপাধ্যায়। এতদিন তিনি কলকাতার বাইরে ছিলেন। তিনি কলকাতা ফিরে বুদ্ধদেবকে দেখতে আসতে পারেন। তবে বুদ্ধদেবের চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডে শুরু থেকে রয়েছেন পালমোনোলজিস্ট অঙ্কন বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ছাড়া রয়েছেন, মেডিসিনের চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী, ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ সৌতিক পাণ্ডা, সুস্মিতা দেবনাথ, ইন্টারভেনশনাল কার্ডিয়োলজিস্ট সরোজ মণ্ডল, ইন্টারনাল মেডিসিন এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ ধ্রুব ভট্টাচার্য, অ্যানেস্থিয়োলজিস্ট আশিস পাত্র, ইনফেকশাস ডিজিজ় স্পেশালিস্ট দীপনারায়ণ মুখোপাধ্যায়, এন্ডোক্রিনোলজিস্ট সেমন্তি চক্রবর্তী, জেনারেল মেডিসিনের সোমনাথ মাইতি এবং ফিজিশিয়ান এবং হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিনটেন্ডেন্ট সপ্তর্ষি বসু।