দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন মনোজ তিওয়ারি। বৃহস্পতিবার ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টের মাধ্যমে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানালেন তিনি। অর্থাৎ বাংলার হয়েও তাঁকে আর খেলতে দেখা যাবে না।জাতীয় দলের জার্সিতে সেঞ্চুরি করেও বাদ পড়েছেন। রঞ্জি ট্রফি জয়ের স্বপ্নও অধরা থেকে গিয়েছে।সেই মনোজ তিওয়ারি আচমকা অবসরের সিদ্ধান্ত নিলেন। বৃহস্পতিবার সশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ক্রিকেট থেকে পাকাপাকিভাবে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করলেন।এ দিন ইনস্টাগ্রামে মনোজ লিখেছেন, “ক্রিকেট খেলাকে বিদায় জানালাম। এই খেলা আমাকে সব কিছু দিয়েছে। প্রত্যেকটা ছোটখাটো জিনিস যা আমি কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি। জীবনে বার বার অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। ক্রিকেট খেলার প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। ঈশ্বরের প্রতিও, যিনি বরাবর আমার পাশে থেকেছেন।”
ফেব্রুয়ারি ৩, ২০০৮। ভারতের জার্সিতে ওয়ান ডে অভিষেক। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। ব্রিসবেনে। ভারতের হয়ে ১২টি ওয়ান ডে ম্যাচে ২৮৭ রান। একটি সেঞ্চুরি। একটি হাফসেঞ্চুরি। দেশের হয়ে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচও খেলেছেন। ওয়ান ডে-তে রয়েছে বল হাতে ৫ উইকেটও। তবে চোট আঘাত ভুগিয়েছে। ঘুরেও দাঁড়িয়েছেন। যদিও বারবার হয়েছেন বঞ্চনার শিকার। পারফর্ম করেও সুযোগ পাননি। ব্রাত্য করে রাখা হয়েছে জাতীয় দলের নির্বাচনের টেবিলে।প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৯৯০৮ রান। ২৯টি সেঞ্চুরি। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৩০৩ রানের ইনিংস। দেবাঙ্গ গাঁধীর পর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ট্রিপল সেঞ্চুরি করা একমাত্র বাঙালি। সাধ ছিল, বাংলার হয়ে রঞ্জি ট্রফি জয়ের। বারবার ফাইনালে উঠে পরাজয় হজম করেছেন। গতবার তাঁর নেতৃত্বেই রঞ্জি ফাইনালে উঠেছিল বাংলা। কিন্তু ইডেনে সৌরাষ্ট্রের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়।যদিও হাল ছাড়ার কথা ভাবেননি। রঞ্জি ফাইনালে হারের ধাক্কার পর বলেছিলেন, ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু ভাবেননি। শুভাকাঙ্খীরা মনে করেছিলেন, আরও ২-৩ মরসুম হয়তো খেলবেন তিনি। ৩৭ বছর বয়স। কিন্তু চূড়ান্ত ফিট। ছন্দেও রয়েছেন ব্যাট হাতে। গত কয়েক মরসুম ধরে রঞ্জি ট্রফিতে বাংলার অন্যতম সেরা ব্যাট। সক্রিয় রাজনীতিতে নেমেছেন। বিধায়ক হয়েছেন। রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীও। রাজনৈতিক ব্যস্ততার মধ্যেও ক্রিকেটকে ভোলেননি। গত কয়েক মরসুমে সাদা বলের ক্রিকেট খেলেননি। মনোনিবেশ করেছিলেন লাল বলের ক্রিকেটে। মনে করতেন, সীমিত ওভারের ক্রিকেট খেলে কারও জায়গা আটকে রাখা ঠিক নয়। তবে একবার রঞ্জি ট্রফিটা হাতে তুলতে চেয়েছিলেন। সেই স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে গেল।