দেবরীনা মণ্ডল সাহা, কলকাতা :- বেহালায় স্কুলছাত্রকে লরির পিষে দেওয়ার ঘটনায় কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। মুখ্যসচিবকে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্পের পরেও কেন এই ঘটনা ঘটল? বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ নবান্নের|মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পরই নগরপাল বিনীত গোয়েলের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। শুক্রবার সকালে স্কুলে আসার সময় স্কুলের সামনেই দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া সৌরনীল সরকারকে পিষে দেয় লরি। যে ঘটনাকে ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে বেহালা চৌরাস্তা। পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। এমনকি আগুন ধরিয়েও দেয়। রাস্তায় চলে অবরোধ, বিক্ষোভ। এমনকি ডায়মন্ডহারবার ট্রাফিক গার্ডেও ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। উত্তেজিত জনতাকে ক্ষান্ত করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। যা ঘিরে আরও ক্ষোভে ফেটে পড়ে উত্তেজিত জনতা। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। দুর্ঘটনার খবর পৌঁছয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কানেও। মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, কী হয়েছিল? কী করে এমন ঘটনা ঘটল? ঘটনা সম্পর্কে জানতে চেয়ে মুখ্যসচিবকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আগেই ঘটনাস্থলে যান পুলিস কমিশনার।
নবান্ন সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী জানতে চেয়েছেন কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, পরিস্থিতি কীভাবে এতটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল। কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।সিপি জানিয়েছেন, ঘটনার সময় ট্রাফিক পুলিশ ঘটনাস্থলে ছিলেন। তা সত্ত্বেও কেন এই ঘটনা, তা খতিয়ে দেখা হবে। কোনও গাফিলতি ছিল কি না, সেটাও দেখা হবে। পাশাপাশি পরবর্তীতে আর এরকম হবে না বলেও আশ্বাস দেন তিনি। এদিকে বেহালা কাণ্ডে নড়েচড়ে বসেছে নবান্নও। ইতিমধ্যেই লালবাজারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন মুখ্যসচিব। প্রসঙ্গত, এদিনের অশান্তিতে জখম হয়েছেন জয়েন্ট সিপি ট্রাফিক। তাঁকে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওই হাসপাতালেই ভরতি রয়েছেন মৃত খুদের বাবা। তাঁর পায়ে গভীর ক্ষত। বড়িশা স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুলের সামনে কোনও ট্রাফিক সার্জেন থাকে না। দিনের পর দিন বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চলে। আর তার জন্য পুলিশকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন তাঁরা। এমনকী পুলিশের বিরুদ্ধে গাড়ি থেকে টাকা তোলার অভিযোগও উঠেছে।এদিন ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে আধিকারিকদের লক্ষ্যে ইট ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। আহত হয়েছেন অন্তত এক অফিসার সহ ৫ পুলিশকর্মী। বেলা বাড়ার পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তবে এখনও ক্ষোভে ফুঁসছেন বাসিন্দারা। ইতিমধ্যেই হাওড়া থেকে ঘাতক গাড়িটিকে আটক করা হয়েছে।